এই ইংল্যান্ড যেন ক্রিকেটের ফ্রান্স!

29

বেলজিয়ামের শীর্ষ তারকা রোমেলু লুকাকু, যার শরীরে বইছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রক্ত। মা-বাবা দুজনই আফ্রিকান দেশটির মানুষ। এই দলেরই আরেক তারকা মুসা ডেম্বেলের বাবা আফ্রিকার দেশ মালির মানুষ। আর ঝাঁকড়া চুলের অধিকারী মারোয়ান ফেলাইনির মা-বাবা মরক্কোর।
এই রাস্তায় ফ্রান্স দলের হালহকিকত তো আরও এগিয়ে। সুপারস্টারের তকমা পাওয়া পল পগবার মা-বাবা গিনির। ফরাসিদের মাঝমাঠের প্রাণভোমরা এনগোলো কন্তের মা-বাবা মালির। বিশ্বকাপের সেরা তরুণ খেলোয়াড় হওয়া কাইলিয়ান এমবাপের বাবা ক্যামেরুন ও মা আলজেরিয়ার নাগরিক। ব্লেইস মাতুইদির মা-বাবা অ্যাঙ্গোলার, আর ডিফেন্সের অন্যতম ভরসা স্যামুয়েল উমতিতির জন্ম ক্যামেরুনে।
রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের ২৩ জনের দলে ১৫ জনেরই শেকড় আফ্রিকার। বেলজিয়ামের ২৩ জনের ৯ জনের গোড়া ভিন্ন দেশে। শুধু এ দুটি দেশই নয়, রাশিয়া আসরে সেমিফাইনাল খেলা ইংল্যান্ড দলেও ছিল আফ্রিকান প্রতিনিধিত্ব। যেমন, ডেলে আলি (নাইজেরিয়া) ও দানি ওয়েলব্যাক (ঘানা)। শুধু রাশিয়া বিশ্বকাপই নয়, ১৯৯৮ সালে ঘরের মাঠে প্রথমবার যখন ফ্রান্স বিশ্বকাপ জেতে, সেই দলেও ছিলেন ছয়জন ভিন্ন জাতি রক্তের ফুটবলার। ফেঞ্চ গায়ানা, সেনেগাল, ঘানা, আলজেরিয়া, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু মিলিয়ে ‘৯৮’র ফ্রান্সে ২২ জনের দলে জিনেদিন জিদান, থুরামসহ ছয়জনই ছিলেন বিদেশি।
গত বছর অনূর্ধ্ব-২০ ফিফা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। যে দলের অন্তত ছয়জন খেলোয়াড় ছিলেন যারা শুধু নাইজেরিয়ার হয়েই খেলতে পারতেন। ফুটবলে ফ্রান্স, বেলজিয়াম বা ইংল্যান্ডকে অনেকেই বৈশ্বিক একাদশ বা ‘মেহমানদের’ দল বলে থাকেন। সেটা বিশ্বকাপ জয়ের পর ব্রিটিশরাও হয়তো মেনে নিয়েছেন। বিশ্ব জয়ের পর ব্রিটেনের রাজপথে সমর্থকরা সুর করে একটি গানই গেয়েছেন, ‘উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড!’ সে বিচারে ফুটবলে ফ্রান্স যা, ক্রিকেটে ইংল্যান্ডও তাই। এরকম ‘মেহমানদের’ নিয়েই তো ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জিতল ইংলিশরা।
ইংল্যান্ড দলের ১৫ সদস্যের সাতজনের শরীরেই অন্যদেশের রক্ত। ফুটবল পাগলের দেশ চ্যাম্পিয়নও হল এক বিদেশি রক্তের নেতৃত্বেই।