ঋণের কারণে আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন রহিম

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর কোতোয়ালি থানার দেওয়ানবাজার রুমঘাটা এলাকায় খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া লাশটি নিজের নিখোঁজ ছেলে মনে করে দাফন করেছিলেন ভোলার ওবায়দুল্লাহ। কিন্তু পরবর্তীতে নিখোঁজ ছেলের মোবাইল চালু হওয়ায় আসল সত্য বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, আবদুর রহিম বলে যাকে দাফন করা হয়েছে তিনি জীবিত রয়েছেন এবং আত্মগোপনে ছিলেন। উদ্ধার হওয়া লাশটি আব্দুর রহিমের নয়।
এদিকে রুমঘাটার খাল থেকে উদ্ধারের পর আব্দুর রহিম ভেবে দাফন করা ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। যদিও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তাদের দাবি, দাফন করা ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর স্বজনদের সঙ্গে মিল পেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে গত ৩ মে রুমঘাটা এলাকায় খাল থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ। পরদিন ভোলা থেকে আসা ওবায়দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি সেটিকে তার ছেলে আবদুর রহিমের মরদেহ বলে শনাক্ত করেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ ভোলায় নিয়ে গিয়ে দাফনও করেন তিনি। তবে কয়েকদিন পর রহিমের মোবাইল ফোন হঠাৎ সচল হয়ে গেলে পিবিআই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রহিমকে জীবিত অবস্থায় শনাক্ত করে তাকে হেফাজতে নেয় তারা। একই সঙ্গে তার বাবা ওবায়দুল্লাহ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, আবদুর রহিম সাম্প্রতিক সময়ে প্রতারণার শিকার হন। তিনি মোবাইল গেমস খেলে চার লাখ টাকা ও একটি আইফোন জেতার প্রলোভনে পড়ে প্রতারকদের হাতে ৪০ হাজার টাকা দেন। এরপর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান। নিখোঁজ থাকার মধ্যে খাল থেকে মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তার পরিবার সেটিকে রহিমের দেহ বলে শনাক্ত করে। রহিমের বাবা ওবায়দুল্লাহ পিবিআইকে জানায়, মরদেহটি দেখে আমার ছেলের মতো মনে হয়েছিল। নিখোঁজ থাকায় এমনটা হয়েছে। আমাদের কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।
এ বিষয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, রহিমের ফোন চালু হওয়ার পর আমরা যাচাই শুরু করি। পরে তাকে জীবিত পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত যাদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে, কারও সঙ্গে উদ্ধার হওয়া মরদেহের মিল পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাত মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। কেউ নিখোঁজ ব্যক্তির স্বজন হিসেবে দাবি করলে ডিএনএ মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।