ক্রীড়া প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন (সিডিএফএ) এর আয়োজনে এবং চসিক মেয়রের পৃষ্ঠপোষকতায় সিডিএফ মেয়র একাডেমি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকালে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি থেকে বেলুন উড়িয়ে লিগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন।
সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিডিএফএ সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম লেদু ও মোহাম্মদ শাহাজাহান, সাংগঠনিক কমিটির উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, সিডিএফএর নির্বাহী সদস্য মাহমুদুর রহমান মাহবুব, কাজী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আবু সৈয়দ মাহামুদ, হারুন আল রশিদ, মোহাম্মদ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, সাইফুল আলম খান, সালাউদ্দিন জাহেদ, সিটি করপোরেশন এর সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মিরন, সিজেকেএস কাউন্সিলর মাকসুদুর রহমান বুলবুল, আবু জাহেদ, রায়হান উদ্দীন রুবেল, এম এ মুসা বাবলু, ইয়াছিন আরাফাত পাবলু, সিডিএফএ কাউন্সিলর মোঃ জহির উদ্দিন কুট্টি, ক্রীড়া সংগঠক আবুল বশর প্রমুখ।
উদ্বোধনী ম্যাচে রামপুর ফুটবল একাডেমি ৬-০ গোলের বড় ব্যবধানে ফরিদ ফুটবল একাডেমিকে পরাজিত করে শুভসূচনা করে। খেলার প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। শারীরিক দিক থেকে বেশ এগিয়ে থাকা রামপুর একাডেমি খেলার শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হয়ে খেলে। একের পর এক আক্রমন করে প্রথমার্ধেই অনেকগুলো গোলের সুযোগ হারায় সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের দল। অন্যদিকে ফরিদ ফুটবল একাডেমির ক্ষুদে ফুটবলাররা আপ্রাণ চেষ্টা করেও প্রবল প্রতিপক্ষকে একবারের জন্য চাপে ফেলতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্র্ধে আরো ৫টি গোল আদায় করে নেয় আসাদ-ফরিদের দলটি।
রামপুর ফুটবল একাডেমির পক্ষে রায়হান ২টি গোল করে। এছাড়া আম্মার, আরিফুল, মং ক্যাচিং এবং আহিদ প্রত্যেকে ১টি করে গোল করে। তবে মাত্র কয়েক মিনিট মাঠে থেকে চমৎকার পায়ের কাজ এবং দুর্দান্ত ফুটবল সেন্স এর মাধ্যমে দু’টি গোলে অ্যাসিস্ট করে অসাধারণ প্রতিশ্রæতির স্বাক্ষর রেখে ফুটবলামুদে দর্শকদের করতালি অর্জন করেছেন ফিউচার স্টার, রামপুর ফুটবল একাডেমির কনিষ্টতম খেলোয়াড় সাইফুল ইসলাম মুন্না। মাত্র মিনিট দশেকের চমকপ্রদ উপস্থিতি মাঠের বাকি ফুটবলারদের সবাইকে টপকে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার এনে দিয়েছে ‘লিটল মাস্টার’ মুন্নাকে।
খেলা শেষে রামপুর ফুটবল একাডেমির মুন্নার সাথে অবশ্য এবং ফরিদ ফুটবল একাডেমির আমির হোসেনকেও পুরস্কৃত করা হয়, যা তাদের হাতে তুলে দেন সিডিএফএ নির্বাহী সদস্য, রিলায়েন্স শিপিংয়ের চেয়ারম্যান মো. রাশেদ।
এদিকে টুর্নামেন্টের প্রতি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়কে সিডিএফএ নির্বাহী সদস্য, বিশিষ্ট ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক, রিলায়েন্স শিপিংয়ের চেয়ারম্যান মো. রাশেদের পক্ষ হতে পুরস্কার প্রদান করা হবে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন।
আজ টুর্নামেন্টের ৩টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সব খেলা এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। পটিয়া ফুটবল একাডেমি বনাম আবদুস সোবহান ফুটবল দল (সকাল ৯টা), স›দ্বীপ ফুটবল একাডেমি বনাম ব্রাদার্স ফুটবল একাডেমি (বিকাল ৩টা), ফিউচার ফুটবল একাডেমি বনাম কালারপোল ক্রীড়া সংস্থা ফুটবল একাডেমি (বিকাল ৪টা)।
দোষ গেলনা!
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে রং বেরং এর জার্সি পরিহিত ২৮ একাডেমি দলের ৬০০ শতাধিক ক্ষুদে ফুটবলার এবং তাদের স্বজন ও ফুটবল পাগল দর্শকদের সরব উপস্থিতি গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করেছিল। কিন্তু আয়োজকদের পুরোনো দোষ বুঝি এখনো গেলনা! ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে ৩টা থেকে মাঠে অহেতুক বসিয়ে রাখা হয় দীর্ঘ দেড় ঘন্টা। কমিটি লোকজন এজন্য দোষারোপ করছেন অতিথিকে। কিন্তু নিজেদের পরিকল্পনার ভুল কখনো স্বীকার করেন না তারা।
স্টেজে কারা উঠবেন- সে ব্যাপারে পুরোনো গলদ থেকে এবারও বেরোতে পারলেননা টুর্নামেন্ট কর্তারা। যার ইচ্ছা তিনি উঠে যাবেন? আর এ জন্য ফটো ফকির ক’জনকে আবার নামিয়ে দিতেও দেখা গেছে।
এত বড় একটা টুর্নামেন্ট চলছে আর অবিশ্বাস্য হলৌ সত্য- মাঠের উত্তর পাশে একই সাথে চলছে ক্রিকেট খেলা!
প্রেস বক্সে সাংবাদিকরা কোথায় বসেছেন তা দেখার দায়িত্বও বোধহয় কারো ছিলনা। প্রেস বক্স সংলগ্ন একমাত্র ওয়াশ রুমটি ব্যবহারের অযোগ্য, তার উপর নাই পানি। ভাগ্যিস মিডিয়া বান্ধব ক্রীড়া সংগঠক সরওয়ার মনি হাফ টাইমে এসেছিলেন।
মেয়রের বক্তব্যে খোশখবরী
সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, অন্য প্রতিষ্ঠানকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে যে গুজব সৃষ্টি হয়েছে তাতে আপনারা কান দিবেন না। এই মাঠে যে কোন টুর্নামেন্ট করতে হলে অবশ্যই সিজেকেএসের অনুমতি নিতে হবে।
পূর্বানুমতি ব্যতিত কেহ সরাসরি ঢাকা থেকে এসে কোন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এখানে টুর্নামেন্ট করার কোন সুযোগ নেই। মেয়র বলেন, আমরা এখানে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবলসহ সবধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। এই চট্টগ্রাম অনেক খেলোয়াড় জন্ম দিয়েছে। আমরা আশা করি, ইনশাআল্লাহ পরবর্তী প্রজ্জন্ম যারা সুন্দর ভবিষ্যত গড়বে, অবশ্যই তাদের জন্য এই মাঠ ভুমিকা রাখবে।