উখিয়া সীমান্তের ওপারে প্রচন্ড গোলাগুলি, এপারে উৎকণ্ঠা

5

কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের ভেতর থেকে আবারও তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর থেকে সীমান্তবর্তী অন্তত সাতটি গ্রামে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। এ সময় উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল, ধামনখালী, থাইংখালী, বালুখালী এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা আতঙ্কে রাত জেগে কাটান। খবর বিডিনিউজ’র
গতকাল শুক্রবার ভোররাত আড়াইটার দিকেও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, রাত ১১টা থেকে ১টার মধ্যে শব্দের তীব্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি। উখিয়া (৬৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, বালুখালী বিওপির কাছাকাছি ওপার থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। এরপর তাদের টহলও বাড়ানো হয়েছে।
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বর্তমানে সীমান্তে পরিবেশ শান্ত রয়েছে।”
আতঙ্ক ভরা কণ্ঠে থাইংখালীর শিক্ষক কমরুদ্দিন মুকুল বলেন, “রাতে প্রচুর গুলির শব্দ শুনেছি। মনে হয়েছে, ওপারে বড় ধরনের সংঘর্ষ চলছে। এ রকম শব্দ আগে কখনও শোনা যায়নি।” একই কথা জানিয়েছেন স্থানীয় এনজিও কর্মী সিফাত আল নূর। তিনি বলেন, “একদম যুদ্ধ চলছে মতো শব্দ পেয়েছি।”
উখিয়া ও টেকনাফের একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝিরা বলছেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে রাখাইন নিয়ন্ত্রিত আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে।
এদিকে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী নিজের ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, “মায়ান মারে তাদের অভ্যন্তরীণ গোলা গুলি। বাংলাদেশে আশ্রিত ১২ নং অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলিতে রোহিঙ্গা আহত। এতে আমরা কি নিরাপদ?”
রোহিঙ্গা আহত হওয়ার দাবির বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ভেতরে গুলি আসার কোনো তথ্য নেই। ক্যাম্পের অবস্থান সীমান্ত থেকে অনেক দূরে।”
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘর্ষ বেড়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আরকান আর্মি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের পুরো ২৭১ কিলোমিটার নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছিল। তারপর থেকে এই অঞ্চলে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।