ঈদ-উল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের টানা ৬ দিনের ছুটি শেষে আবারও কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে নগরবাসী। বাস ও রেল স্টেশনে ভিড় না থাকায় স্বস্তিতেই ফিরছেন তারা।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে নগরের নতুন ব্রিজ, বহদ্দারহাট, অলংকার, জিইসি মোড়, দামপাড়া, সিনেমা প্যালেস, অক্সিজেন মোড়, বিআরটিসিসহ প্রায় সব বাস টার্মিনালে নগরফেরা যাত্রীর চাপ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনও সময়মতো এসে পৌঁছে চট্টগ্রাম স্টেশনে।
যাত্রীরা জানান, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারা অনেক সৌভাগ্যের। যাওয়ার সময় কষ্ট হলেও স্বস্তি নিয়ে ফিরতে পারছেন। কোথাও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। তবে বরাবরের মত ঈদ পরবর্তী যাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ছিল যাত্রীদের মুখে।
ঈদের আগে ও পরে যাত্রীদের চাপ একটু বেশি থাকে। তাই একটু ভোগান্তি হয়। তবে রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় এবার তা হয়নি। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ফিরতে পারছে।
তবে অন্যান্য বছরের ছেয়ে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার সময় তেমন ভিড় নেই। সোমবার সরকারি অফিস, আদালত খোলা থাকায় রোববার যাত্রীর উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি ছিল।
এদিকে, ঈদের ছুটি শেষে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। দীর্ঘ ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় তেমন কর্মব্যস্ততা ছিল না অফিসগুলোতে। কলিগদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায় অফিসে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষকে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কারযকর পদক্ষেপ চায় দেশের মানুষ। উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা ও শেয়ারবাজার খুলেছে। ঈদুল ফিতরের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গত ৯ এপ্রিল। ঈদ ও বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল থেকে, যা শেষ হয় ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ এবং ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন।
ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ৫ দিনের ছুটি শেষে ট্রেন ও বাসে ঢাকায় ফিরছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল দশটায় কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছায়, উত্তরবঙ্গ থেকে আসা একতা এক্সপ্রেস। ঈদযাত্রার মতোই যাত্রীদের বেশ চাপ ছিল এই ট্রেনে।
এবার সড়কপথে তুলনামূলক ভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি যাত্রীদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তা সম্ভব হয়েছে। রাজধানীর সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে অনেকটাই নির্বিঘেœ নগরীতে ফিরছেন মানুষ। তবে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন, কেউ কেউ।
গাড়ির চাপ বাড়ায়, ঢাকায়সহ সকল মহানগরীতে ঢুকতে কিছুটা যানজটে পড়তে হয় যাত্রীদের। এছাড়া, ঈদযাত্রার মতই ফিরতি যাত্রাও স্বস্তির বলছেন যাত্রীরা।
কর্মজীবীদের অনেকে আবার ঢাকা ছাড়ছেন। ঈদে ছুটি না পাওয়ায়, এখন যাচ্ছেন প্রিয়জনের কাছে। আর জীবন-জীবিকার তাগিদে যারা নগরীতে ফিরছেন, তারা ফেলে এসেছেন, মায়া।
ঈদের ছুটি শেষ, কাজে ফিরছে মানুষ ঈদুল ফিরতের টানা পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি শেষ হয়েছে। শবে বরাতের ছুটি ও তার আগের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ১০ থেকে ১১দিন ছুটিও কাটিয়েছেন অনেকে। এবার যার যার কাজে ফেরার পালা। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও ট্রেন স্টেশনে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
ছুটি শেষে গতকাল থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হয়েছে। ফলে কর্মস্থলে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ছুটে আসছেন কর্মমুখী মানুষ। বিশেষ করে নিরাপদ যাতায়াতের মাধ্যম হওয়ায় রেলপথে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যস্ত হয়েছে স্বীকার করে স্টেশন মাস্টার বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে দু-একটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যস্ত হয়েছে। তবে কোনও ট্রেন বাতিল করা হয়নি। অধিকাংশ ট্রেন সময়মতো ঢাকায় এসে পৌঁছায়।’
সোমবার দুপুরে বহদ্দার হাটবাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায় দূরপাল্লার প্রত্যেকটি বাসে করে ঈদে বাড়ি যাওয়া মানুষেরা ফিরছেন। গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরা এক শিক্ষার্থী বলে, ‘কোনও সমস্যা হয় নাই রাস্তায়। গাড়ি টানা চলছিল। তবে আজ গরমটা বেশি।’
বাস থেকে নেমেই যাত্রীদের সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছিলো। সিএনজি চালকরা নাগালের বাইরে ভাড়া চাচ্ছেন। কেউ মিটারে যাত্রী নিচ্ছেন না তারা। রোদের গরমে অতিষ্ঠ যাত্রীরা বেশি কথা না বাড়িয়ে রাজি হয়ে যাচ্ছেন।
বাড়ি হতে কর্মক্ষেত্রে ফেরৎ আসার পথে মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্টদের আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আশা রাখে যাত্রীসাধারণ।