ঈদগাঁও প্রতিনিধি
কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে সদ্যভূমিষ্ঠ কন্যা সন্তানকে বিক্রির চেষ্টায় দায়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাতে উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের মধ্যম গজালিয়া এলাকার এক মুসলিম নারীর সদ্যজাত সন্তানকে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পরিবারের কাছে বিক্রির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুক্তভোগী শিশুটির মা তসলিমা আক্তার জানান, গত শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে আমার প্রসববেদনা উঠে। এক পর্যায়ে আমার নিজের ঘরেই সন্তান প্রসব করি। পরদিন শনিবার বিকেলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ভবেশ দত্ত, মৃত আবুল খায়েরের ছেলে গুরা মিয়া এবং আমির হোসেনের মেয়ে জোছনা আক্তার আমাকে হাসপাতালে নেয়ার কথা বলে এক হিন্দু পরিবারের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানেই তারা আমার সদ্যোজাত সন্তানকে কৌশলে ঐ পরিবারের হাতে তুলে দেন।
তিনি আরও বলেন, আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমার সন্তানকে দিয়ে দেয়। পরে আমি জোর করে গিয়ে বাচ্চা নিয়ে আসি। কিন্তু এরপর তারা খালি স্ট্যাম্পে জোর করে আমার স্বাক্ষর নেয় এবং আমাকে হুমকি দেয়।
ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভুক্তভোগী তসলিমা আক্তার গজালিয়া এলাকার বাসিন্দা বেলাল উদ্দিনের স্ত্রী। এটি ছিল তার তৃতীয় কন্যাসন্তান।
অভিযোগ রয়েছে, মেয়ে হওয়ায় তার স্বামী বেলাল উদ্দিন পিতৃত্ব অস্বীকার করে স্ত্রী ও নবজাতককে ফেলে পালিয়ে যায়।
ইসলামাবাদ ইউপি সদস্য জুবায়েদ উল্লাহ জুয়েল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশকে খবর দিলে অভিযুক্ত ডা. ভবেষ, গুরা মিয়া ও জোছনা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইসলামাবাদ ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও মানবতাবিরোধী ঘটনা। একজন অসহায় মায়ের সন্তানকে কৌশলে অন্য পরিবারের হাতে তুলে দেয়া গুরুতর অপরাধ। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মছিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর ও দুঃখজনক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।