ঈদগাঁও প্রতিনিধি
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের আওতাধীন নাপিতখালী বনবিটে রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে পাহাড় ও গাছ কাটা বেড়ে গেছে। চারদিকে শুধু পাহাড় কর্তন করে জায়গা ভরাট ও গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংঘবদ্ধ পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট পাহাড়ের মাটি ও গাছ অবৈধ ভাবে কেটে ডাম্পার যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছে। এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কর্তনের ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদী সংগঠন।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে নাপিতখালী বনবিটের ভিলেজারপাড়াস্থ ২০০৫-৬ সালের দশ নাম্বার গ্রæপের বাগান থেকে গাছ কেটে পাচারকালে প্রায় লক্ষাধিক টাকার কাঠ জব্দ করে বনবিভাগ। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন আহমেদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর নাপিতখালীর বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকহারে পাহাড় কেটে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। দালান, বাড়িঘর ও দোকান মার্কেট নির্মাণ করার জন্য জায়গা ভরাট করতে হাজার হাজার ফুট মাটি প্রয়োজন। স্থানীয় হাকিম আলী সিন্ডিকেট সরকারি পাহাড় কেটে ভরাট কাজে মাটি যোগান দিচ্ছে।
সরেজমিনে আরও জানা গেছে, স্থানীয় বন বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গভীর রাতে গাছ কেটে ডাম্পার ভর্তি করে পাচার করছে হাকিম আলীর নেতৃত্বে ৬নং ওয়ার্ড ভিলেজারপাড়ার নুরুল হক ও পাশ্ববর্তী ইসলামাবাদ ইউনিয়নের নুরুল হক ও তার ড্রাইভার আবদুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের অভিযান তৎপরতা না থাকায় হাকিম আলী সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কেটে মাটি, বালি ও গাছ পাচার করছে। ডাম্পার ও পিকআপ যোগে মাটি ও গাছ ভর্তি করে বিভিন্ন এলাকায় মাটি দিয়ে জায়গা ভরাট করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বনভূমি হতে গাছ-পাহাড় কর্তন ও মাটি সরবরাহ নিষিদ্ধ থাকলেও প্রভাবশালী ঐ চক্র আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক পাহাড় কর্তন ও বনায়নের গাছ কেটে যাচ্ছে। বর্তমানে এমন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সরকারি পাহাড় ও বনায়ন গুলো সুরক্ষা করতে অবিলম্বে পাহাড় কর্তন ও গাছ কাটা বন্ধের জন্য উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, গেল রাতে পাচারকালে প্রায় ৮০টি ছোট বড় কাঠ জব্দ করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া পাহাড় কাটা ও গাছ কাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে পাহাড় কাটা ও গাছ কাটায় জড়িত অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়ছে। এসব অপরাধে যারা জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ফুলছড়ি রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শীতল পাল বলেন, খবর পেয়ে সরজমিন বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। আমরা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে।