সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও
ঠিকাদারের অবহেলার মাশুল দিচ্ছেন কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ের পূর্ব ফরাজিপাড়ার কয়েকশ পরিবার। খালের ভাঙা পাড়ে গাইডওয়াল নির্মাণ কাজ শেষ না করায় লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। এতে ২০টি ঘর তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও শতাধিক ঘর। এ জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কাজে অবহেলার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
এছাড়া তারা জানান, ইউনিয়নের একমাত্র পাকা সড়ক পানির স্রোতে কয়েক জায়গায় ভেঙে গেছে। ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন জালালাবাদ ও পোকখালী ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ফুলেশ্বরী নদীর জালালাবাদের মনজুর মৌলভীর দোকান ও পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব সিকদারপাড়ার সংযোগ ব্রিজটি ৫ বছর আগে ঢলের পানিতে দুটি গার্ডারসহ তলিয়ে যায়। ওই সময় ব্রিজের গার্ডারের কিনারা থেকে বালি নেওয়ায় ঢলে ব্রিজটি তলিয়ে যায়। ওই সময় মনজুর মৌলভীর দোকানের সাইডের বাঁধ ভেঙে কয়েকটি বাড়ি তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়ক। তখন বাঁধে বস্তা ফেলে মাটি দিয়ে উঁচু করে ভেতর অংশে একটি ওয়াল দেওয়া হয়।
তারা আরও জানান, সম্প্রতি সেই ভাঙা অংশটিতে গাইডওয়াল দিতে দরপত্র হয়। ফরিদপুর এলাকার এক ঠিকাদার কাজটি পান। অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে টাকা তুলে নিতে তড়িঘড়ি করে আগের ওয়ালটি ভেঙে পাইলিং শুরু করেন। এলজিইডিকে কাজ দেখিয়ে বিল তোলার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর কাজটি আর এগোয়নি। ফলে গত বুধবার রাতে নদীতে মৌসুমের প্রথম ঢল নামলে ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে এলাকায়। পানির স্রোতের প্রায় ২০টি ঘর তলিয়ে যায়। প্লাবিত হয় শতাধিক ঘর। এ সময় অনেকের ধান, আসবাবপত্র, গোয়ালের গরু-ছাগল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তলিয়ে গেছে পুকুরের মাছ। বুক সমান পানির স্রোতে ভেঙে গেছে পাকা সড়কটি। গত বৃহস্পতিবার সারাদিন এবং শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানিতে প্লাবিত হয়ে সময় কেটেছে দুর্গতদের। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে।
ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিমল চাকমা বলেন, পাহাড়ি ঢলের কারণে খালের পাড় ভেঙে যাওয়ায় মূলত এই দুর্যোগ। কোন প্রাণহানি হয়নি। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কয়েকদিন সময় লাগবে। আপাতত উপজেলা প্রশাসন থেকে জরুরি সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।