নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামজুড়ে মিছিল আর মিছিল। এতে দাবি উঠেছে ইসকন নিষিদ্ধের। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে মহাসড়কে ইসকন নিষেদ্ধের দাবিতে ক্ষোভ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। গতকাল বুধবার নগরের টাইগারপাস এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। তার আগে মঙ্গলবার নগরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় ইসকন নিষেদ্ধের দাবি নিয়ে প্রতিবাদি স্লোগানে মিছিল করেছে স্থানীয় লোকজন।
টাইগারপাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে অংশ নেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমসহ হাজারো ছাত্র-জনতা। সেখানে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এজেন্ট হিসেবে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে ইসকন। আমরা দেখেছি, ৫ আগস্ট দাড়িওয়ালা-টুপিওয়ালারা হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিয়েছে। তবুও উগ্র হিন্দুত্ববাদী জঙ্গি সংগঠন সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইকে হত্যা করেছে। ভারতে বসেই স্বৈরাচার হাসিনা যত ষড়যন্ত্র করুন না কেন, আমরা রুখে দিব। বাংলাদেশে সকল ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। ধর্মের নামে উগ্রবাদীতার এখানে ঠাঁই নেই। ইসকনের বর্বরতা আইয়ামে জাহিলিয়াতকে হার মানিয়েছে। তাই অবিলম্বে ইসকন নিষিদ্ধ করতে হবে।
ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘তাদের কর্মকান্ড আমাদের হতবাক করেছে। দেশের সাধারণ সনাতনীরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। কিন্তু স্বৈরাচার হাসিনার দালালরা ইসকনকে উস্কে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। তবে আমরা বেঁচে থাকতে তা কোনভাবেই হতে দেবো না। ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ফ্যাসিবাদীদের রুখে দিতে জুলাই-আগস্টের মতো আবারও মাঠে থাকবে ছাত্রজনতা।’
সমাবেশে বক্তারা যারা যারা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের দ্রুতসময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
এদিকে নিহত এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে উপস্থিত লোকজন বিক্ষোভ করেন। সেখানেও ইসকন নিষেদ্ধের দাবি জানানো হয়। জানাজা শেষে কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে লোকজন বিক্ষোভ করেন। তখন আবেগাপ্লুত ছাত্র-জনতা নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
অন্যদিকে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে আইনজীবী সাইফুলের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আইনজীবী, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। নামাজে জানাজার পরে দ্রুতসময়ের মাঝে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে স্থানীয় জনতা বিক্ষোভে জড়ো হন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চলাকালে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।