পূর্বদেশ ডেস্ক
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো না পড়ানোর বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকার কথা বলেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আর আদালতের সিদ্ধান্ত আসার আগে ইশরাকের সমর্থকদের ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহবান জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ মনে করে, ইশরাকের সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে যে কর্মসূচি পালন করছেন, তা আদালত অবমাননার শামিল।
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকদের টানা আন্দোলনের পাঁচ দিনের মাথায় এ অবস্থান জানাল স্থানীয় সরকার বিভাগ।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম মেয়র পদে তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি। খবর বিডিনিউজের
এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বুধবার থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
দাবি আদায়ে গতকাল রবিবারও তারা নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন। আজ সোমবার ডেকেছেন ‘বøকেড’ কর্মসূচি।
আগের দিন শনিবার তারা ‘সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা’ করেন। কর্মসূচির পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভ‚ঁইয়াকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে এদিন স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি চিঠি পাঠান ইশরাক। নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ধানের শীষের প্রার্থীর প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তোলেন।
এদিকে আন্দোলন শুরুর দিনই ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদ রিট আবেদনটি করেন, যেখানে ইশরাককে মেয়র ঘোষণাসংক্রান্ত মামলার বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
গতকাল রবিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইশরাকের বিষয়ে মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে রিট আবেদনের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত আসার পর। ইশরাক হোসেনের রায়ের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসংগতি তুলে ধরে এবং শপথ আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ গত ২৮ এপ্রিল লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এছাড়া মো. মামুনুর রশিদ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের ২৭ মার্চের রায় ও ডিক্রি, নির্বাচন কমিশনের ২৭ এপ্রিল করা সংশোধিত গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন।
সরকার বিভাগ বলছে, ‘ওই রিট মামলায় ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতারণামূলক রায় দেওয়ার জন্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। হাই কোর্টে রিট মামলা বিচারাধীন অবস্থায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এমন আন্দোলন আদালতের প্রতি অনাস্থা অথবা অবমাননার শামিল। নাগরিক সেবা ব্যাহত ও অচলাবস্থা দূর করতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে’।