পূর্বদেশ ডেস্ক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর আন্দোলন ৪৮ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়েছে। শপথ না পড়ানোর রিট আবেদন খারিজের পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন ইশরাক।
আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট জনভোগান্তির জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির এ সদস্য।
এদিন বিকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে ‘ঢাকাবাসীর অবস্থান’ কর্মসূচিতে পৌঁছান ইশরাক হোসেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘সরকারের পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই আন্দোলনে আসতে বাধ্য হয়েছি আমরা’।
নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে আপনারা ৭ দিন নিরলস পরিশ্রম করে আন্দোলনকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, সেটার জন্য উনি (তারেক রহমান) আপনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। আমি নিজেও আপনাদের কাছে চিরজীবন ঋণী থাকব। এই রিট খারিজের মধ্য দিয়ে সব শেষের আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে’।
সরকারকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ যেহেতু আমরা রায় পেয়েছি, এটি নিয়ে কাজ চলছে। যদি আবারও টালবাহানা করে এই সরকার, আবারও কালক্ষেপণ করে এই সরকার, তাহলে কাল সকালেই আবার এখানে এসে আমরা ঘেঁরাও দেব। ২৪ ঘণ্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা সরকারকে পর্যবেক্ষণ করা হবে যে তারা কী করে। সেটার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কার্যক্রম বা পদক্ষেপ নেওয়া হবে’। খবর বিডিনিউজের
এ সময় আদালতের রায় বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানোর পাশাপাশি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের যে দাবি, সেটি চলমান থাকবে বলেও জানান ইশরাক হোসেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রæয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। সে নির্বাচনে বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম মেয়র পদে তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এরপর এ রিট মামলার ওপর মঙ্গল ও বুধবার কয়েক দফা শুনানির পর গতকাল বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে আদেশ দেয় বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ।