ইরানের শক্তিশালী মিসাইলে কুপোকাত দখলদার ইসরাইল বাহিনী

1

জসিম উদ্দিন মনছুরি

১৪ মে ১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি শুরু হয়। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে রিফিউজি হয়ে আসার পর ইহুদিরা ফিলিস্তিনীদের বিতাড়িত করে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। দখলদার ইসরাইল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অকারণে ফিলিস্তিনের জায়গা দখল করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপন করে আসছে। ১৯৪৮ সালের পর থেকে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা।ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য স্বাধীনতাকামী হামাস সংগ্রাম করে আসছে। ১৯৬৭ সালে আরব ইসরাইল ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি, মিশরের সিনাই উপত্যকাসহ আরবদের বেশ কিছু জায়গা দখল করে নেয় দখলদার ইসরাইল বাহিনী। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যুদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কোন কারণ ছাড়া তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নিরীহ ফিলিস্তিনবাসীকে হত্যা করা ইসরাইলের প্রাচীন রীতি। বিগত দেড় বছরে প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস, ইয়ামেনের হুতিদের প্রবল প্রতিরোধে দিশেহারা হয়ে পড়ে দখলদার ইসরাইল বাহিনী। ইসরাইল বরাবরই প্রতিপক্ষকে নিজেদের অস্তিত্বের হুমকি মনে করে। কথিত আছে ইসরাইলের অস্ত্রভান্ডারে প্রায় ৯০ টির মত পারমাণবিক বোমা রয়েছে। ইজরায়েল চায়না প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিধর হোক। দীর্ঘদিন ধরে ইরান নিজেদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করে আসছে। তাতে ইজরাইলের ঘোর আপত্তি। ইসরাইল নিজেদের অস্তিত্বের হুমকি মনে করে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাকে। ইসরাইল মনে করে যে কোন সময় ইরান পারমাণবিক বোমার অধিকারী হয়ে যাবে। এতদিন পর্যন্ত দুই দেশই হুংকার ছেড়ে আসছিল। ইরান ও আমেরিকার মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনাও চলছিল। এরই মাঝে ইসরাইল বিগত ১৩ জুন অতর্কিত ইরানে হামলা করে বসে।ভোর রাতে ইজরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের সক্রিয়তায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম বিকল করে দিয়ে প্রায় ২০০ টি যুদ্ধবিমান নিয়ে ইরানের পারমাণবিক চুল্লিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণায় হামলা করে। ইসরাইলের হামলায় ইরানের উচ্চপদস্থ বিশ জন কমান্ডার সহ প্রায় ১২ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়। এর জেরে ইরান ঘোষণা দেয় হামলার প্রতিশোধ নেয়ার। ফলশ্রুতিতে ১৪ জুন ভোররাতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইসরাইলের হামলার জবাব দেয় ইরান। ইরান বিশ্ববাসীকে নজিরবিহীন হামলার লাইভ অনুষ্ঠান দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। পৃথিবীর অন্যতম আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমের দেশ ইসরাইল ইরানের ক্ষেপাণস্ত্র প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়। ইজরায়েলের বিভিন্ন স্থাপণা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে অকেজো করে ইরান একের পর এক হামলা করে আসছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ইসরাইলের কাছে তাদের গর্বের প্রতীক আইরন ডোম, পেট্রিয়ট ও থার্ডের মতো শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম রয়েছে। ইরানের ক্ষেপাণস্ত্র দুর্বেধ্য আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে অকেজো করে ইজরাইলের অভ্যন্তরে একের পর এক হামলায় বিধ্বস্ত করে দেয়।ইরানের প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় এক লক্ষ মার্কিন ডলার। কিন্তু ইসরাইলকে প্রতিটি অস্ত্র প্রতিহত করতে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হয়। ইরান এই পর্যন্ত ইসরাইলের অভ্যন্তরে প্রায় ৫০০ টির মত মিসাইল ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। ইরানের উচ্চমাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম। ফলে ইসরাইলের নিজেদের অস্তিত্ব সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার গণমাধ্যমের প্রকাশ ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে গিয়ে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম ফুরিয়ে এসেছে। ইরান দাবি করছে এরই মাঝেই ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। এ পর্যন্ত ইরান ইসরাইলের উত্তরপ্রদেশ হাইফা, তেলআবিব শহরকে প্রায় গুড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি ক্ষণে সাইরেনের শব্দে ইহুদীবাদী ইসরাইলিরা আশ্রয় কেন্দ্রে হুমড়ি খেয়ে দৌড়াচ্ছে। ইরানের আক্রমণের জেরে স্বয়ং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী মাটির নিচের বাঙ্কারে লুকিয়ে পড়েন। ইজরায়েলের মোসাদ সদর দপ্তর ও বিজ্ঞান সদর দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণা ইতিমধ্যেই ইরান গুড়িয়ে দিয়েছে। ইরান ইতোমধ্য ঘোষণা দিয়েছে ইজরায়েলের জন্য আরো চমক অপেক্ষা করছে। এতদিন পর্যন্ত তারা সাধারণ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করেছিল। সর্বশেষ ফাত্তা-১ ও সিজ্জিল নামক ব্যাপক বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ শুরু করেছে ইরান। এ পর্যন্ত ইরান অত্যাধুনিক এফ- ৩৫ যুদ্ধবিমান পাঁচটি ও পঞ্চাশের অধিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তাছাড়া ইসরাইলের বিলিয়ন ডলারের গোয়েন্দা নজরদারি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ইরানের অভ্যন্তরে পারমানবিক স্থাপণাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ইজরাইল আক্রমণ করলেও অবকাঠামোগত কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও পারমাণবিক কেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি করা সম্ভব হয়নি। কেননা ইরানের পারমাণবিক স্থাপণাটি মাটির নিচে প্রায় ৩২ তলা বিশিষ্ট নিচে অবস্থিত হওয়ায় এর ধারে কাছে যাওয়াও ইসরাইলিদের সম্ভব হয়নি। তাছাড়া ইরান মাটির অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র শহর নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমিনী ইসরাইলকে নিচিহ্ন না করা পর্যন্ত যুদ্ধক্ষান্ত হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ইরান অপারেশন প্রমিস থরু দিয়ে হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শহর মাটির সাথে গুড়িয়ে দিয়েছে। ইজরায়েলের অপারেশন রাইজিং লায়ন এর প্রতিবাদে ইরানের অপারেশন প্রমিস থ্রু নামক যুদ্ধে ইজরাইলিদের বলতে শোনা যায় ইরান ওই আর সরি; তোমরা যুদ্ধ বন্ধ কর। আমরা ক্ষয়ক্ষতি আর সামলাতে পারছিনা। ইজরায়েল ক্ষয়ক্ষতি প্রকাশ না করলেও গোপন ভিডিওর মাধ্যমে জানা যায় তাদের প্রায় কয়েক শত নাগরিক হতাহত হয়েছে। ইসরায়েল এতদিন পর্যন্ত নিজেকে মধ্যপ্রাচ্যের অঘোষিত শক্তি বলে পরিচয় দিয়ে আসলেও সেই শক্তির পচন ধরিয়ে দিয়েছে ইরান। ইসরাইলের সাথে শক্তিশালী আমেরিকা থাকলেও ইরান একাই লড়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আমেরিকাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যে পারাস্যকে আলেকজান্ডার পরাজিত করতে পারেনি সেখানে ইজরাইলিরা ইরানের কিছুই করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন , বিশ্বব্যাপী আমেরিকার ৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি থাকলেও তার জন্য প্রতিবছর আমেরিকাকে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার অপচয় করতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যুদ্ধবাজ হওয়ার কারণে আমেরিকার পতন সুনিশ্চিত হবে। এর মাঝে মুসলিম অনেক দেশ সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে। ইরানের পারমানবিক স্থাপনা সুরক্ষিত রাখতে ইরানে রাশিয়ার ৬০০ জন বিজ্ঞানী অবস্থান করছে বলে জানা যায়। যুদ্ধের প্রাক্কালে ইরানে চীন থেকে বেশ কয়েকটি অস্ত্রবাহী বিমান এসেছে বলেও জানা যায়। যেই ইসরাইল দম্ভ করে ইরানকে শেষ করতে চেয়েছিল সেই ইসরাইলের এখন বেহাল দশা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায় ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্রভান্ডারে শেষ হয়ে আসছে। তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ইরান দাবি করেছে ইজরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা সম্পূর্ণ নিজেদের দখলে নিয়ে যখন ইচ্ছা তখন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের সাথে যোগ দিয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তানের স্বাধীনতাকামী হামাস এবং ইয়ামেনের হুতি প্রতিরোধ যুদ্ধারা। চতুর্মুখী আক্রমণে ইজরাইলের এখন পতন সুনিশ্চিত বলে জানা যায়। ইসরাইল এখনো আমেরিকার মদদে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসলেও অবশেষে কি ইরানের হাতে পতন হবে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ইরান যেভাবে আক্রমণ প্রতি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে তারই সুবাদে হয়তো ইসরাইলের পতন সুনিশ্চিত। ইরানের হাতে এমন কিছু অস্ত্র রয়েছে যে অস্ত্রগুলো এখনো ব্যবহার করেনি তারা। এমনকি ইরানের সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের তাÐবে ইজরাইলের এত বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যা দেখে মনে হয় যেন বিধ্বস্ত গাজার চিত্র। ইসরাইল গাজাকে যেইভাবে বিধ্বস্ত করেছিল সেই গাজার চিত্রই এখন ইজরাইলের অলিতে গলিতে প্রতিফলিত হচ্ছে।
২০০২ সালে ইজরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আমন্ত্রণে ইরাকের পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস করার লক্ষ্যে আমেরিকা ইরাকে হামলা করে। হামলায় আমেরিকার ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্রয় ক্ষতি হয়। কথিত আছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমেরিকা। আমেরিকার প্রায় ৫ হাজার সৈন্য নিহত হয়। এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগণিত নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। আমেরিকান সিনেটর মনে করেন, নেতানিয়াহুর ফাঁদে পা দিলে আমেরিকা ভুল করবে। নিজেদের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের একক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করার জন্য একেক সময় একেক রাষ্ট্রকে টার্গেট করে দখলদার ইসরাইল। এবারের টার্গেটৈ পরিণত হয়েছে ইরান। তবে ইরানের প্রেক্ষাপটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইরান নিজেদের অস্ত্রভান্ডার যেভাবে সমৃদ্ধ ইরাক সেভাবে সমৃদ্ধ ছিল না। ইসরাইল মনে করেছিল ২০০ বিমান নিয়ে হামলা করে ইরানকে ক্ষতবিক্ষত করে দিবে। ধারণার ভুল পাল্টে দিয়ে আয়তুলল্লা আলী খোমিনীর দেশ ইরান ইজরাইলকে নিজেদের অস্ত্রভান্ডার দিয়ে তছনছ করে দিয়েছে। এখন স্বয়ং ইসরাইলের অভ্যন্তরে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ উঠেছে। শাহ বংশের সাথে হাত মিলিয়ে ইসরাইলিরা ইরানে বিদ্রোহ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। শত শত মোসাদ এজেন্টকে ইরানের অভ্যন্তরে নিয়োগ দেয়। সাম্প্রতিক আক্রমণে ইরানের অভ্যন্তরে মোসাদ সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানি জনগণকে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু এরই মাঝেই ইরান অভিযান চালিয়ে মোসাদের অনেক সদস্যকে আটক করেছে। একজনকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে গোয়েন্দাগিরির ভয়াবহ শাস্তির জানান দেন। ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গোপন টার্গেট করেই মোসাদের মাধ্যমে গুপ্তহত্যা করে আসছে। এবারো ইজরাইলের টার্গেট ছিল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা এবং নেতৃত্বশূন্য করে দেয়া। ইরান তাদের প্রথম সারির ২০ জন কমান্ডারকে হারানোর পরেও ভেঙ্গে পড়েনি বরং দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ইসরাইলের পতন নিশ্চিত বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। ইসরাইল ইরানকে পরাজিত করতে পারলে হয়তো তারা মধ্যপ্রাচ্যে একক শক্তি হিসেবে যখন যাকে ইচ্ছা তাকেই আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু তাদের আশায় গুড়েবালি মিশিয়ে ইরান নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৬৭ সালে ৬ দিনব্যাপী আরব ইসরাইল যুদ্ধে ইজরাইল সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিশরের সিনাই উপত্যকাসহ বেশ কিছু আরবভূমি দখল করে নিয়েছিল। এরপর থেকেই ইসরাইল বেপরোয়া ভাবে লেবানন, সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে হামলা চালিয়ে আসছে। এমনকি সর্বশেষ গাজা দখলে নেয়ার জন্য গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে গাজার অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়। এবার ইরানের হামলায় ইসরাইলের অভ্যন্তরে গাজার চিত্রই মনে করিয়ে দেয়। তবে কি এই যুদ্ধে ইরান বিজয়ের দ্বার প্রান্তে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ইরানের সাথে পেরে উঠবে না দখলদার ইসরাইল বাহিনী। গোপন বাঙ্কারে তারা অবস্থান নেয়ায় হতাহতের সংখ্যা কম হলেও অবকাঠামোগত ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মনে হচ্ছে যেন গাজা প্রান্তর। পৃথিবীর সকল মুসলমানের আশা ইহুদীবাদী ইসরাইলের ধ্বংসের মাধ্যমে ইরান নবশক্তি হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভাব হোক। ইহুদিদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে লিখা রয়েছে ইহুদি রাষ্ট্র ৮০ বছরের বেশি টিকে না। এ পর্যন্ত ইহুদি রাষ্ট্র কয়েকবার গঠিত হলেও তারা ৮০ বছরের মধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই ভবিষ্যৎবাণী এবং ধর্মগ্রন্থের কথা যদি সত্যি হয় তাহলে ইহুদী রাষ্ট্রের আয়ু ২০২৬ সালে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি ইরানের হাতেই ইসরাইলের পতন অনিবার্য? ইরান যেভাবে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা অব্যাহত রেখেছে তাতে মনে হয় ইজরাইল কখনো পেরে উঠবে না। ধ্বংস হোক ইসরাইল। ধ্বংস হোক আগ্রাসী শক্তি।পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসুক। বিজয় হোক ইমরানের – জয় ইরান।
লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক