নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্রাহকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংকের (ইবিএল) চেয়ারম্যানসহ ব্যাংকটির ৪৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে মামলাটি করেন মুর্তুজা আলী নামে এক ব্যবসায়ী। মামলায় ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসিকে প্রথম আসামি এবং ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলি চৌধুরীকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখারসহ ৪৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বাদী মুর্তুজা আলী ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক।
সূত্র বলছে, ২০১৭ সালে মুর্তুজা আলী ইস্টার্ন ব্যাংকের ওআর নিজাম শাখায় পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়ী হিসাব হিসেবে জমা করেন। নিয়ম অনুযায়ী ৭ শতাংশ সুদ পাওয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক সেটি প্রদান করেনি। পরে সুদসহ তার মোট টাকার পরিমাণ ৬ কোটি ১০ লাখ হলে তিনি তা ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় স্থানান্তর করেন। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনি চান্দগাঁও শাখায় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকার ছয়টি এফডিআর (স্থায়ী আমানত) খোলেন এবং এর বিপরীতে একটি ওএসডি (সিকিউরড ওভারড্রাফট) ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০১৯ সালে বিদেশে থাকা অবস্থায় তিনি জানতে পারেন, তার নামে ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় দুটি জাল সঞ্চয়ী হিসাব ও চারটি জাল ঋণ হিসাব খোলা হয়েছে। তার জাল স্বাক্ষর ও ভুল তথ্য ব্যবহার করে ওই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে নয় কোটি ৭৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৭ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে এবং পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী হেলাল বিন মঞ্জুর তামিম জানিয়েছেন, তার মক্কেল বিভিন্ন মেয়াদে মোট পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রেখেছিলেন। এছাড়া তার সঞ্চয়ী হিসাবে আরও ৫০ লাখ টাকা ছিল। কিন্তু বিদেশে থাকার সুযোগ নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা তার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ঋণ গ্রহণ করে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মুর্তুজা আলী ইস্টার্ন ব্যাংকের কাছে মোট ১১ কোটি টাকা পাবেন, যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করেছে। আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।