ইন্দোনেশিয়ায় বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের হাহাকার

60

ভয়াবহ সুনামিতে অন্তত ৪২৯ জনের প্রাণহানির পর ধ্বংসস্তূপে প্রাণের স্পন্দন খুঁজছে ইন্দোনেশিয়া। সে দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১৫০ জন। ড্রোন ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ব্যবহার করে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সুনামিতে আহত হয়েছে আরও অন্তত ১ হাজার ৪৫৯ জন। ঘরহারা ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরে। সেইসব শিবিরে নেই পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি ও খাবার। শিশুরা জ্বর ও মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হলেও তাদের জন্যও পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী নিশ্চিত করা যায়নি। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে মেঝেতেই কাটাচ্ছেন দিন-রাত। বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না। কেবল সাধারণ মানুষই নয়, আবারও দুর্যোগের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরাও। এমন অবস্থায় সেখানে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। শনিবার উপকূলীয় শহর সুমাত্রা এবং জাভায় পর পর দুটি ঢেউ আঘাত হানে। প্রথম ঢেউ অতটা শক্তিশালী না হলেও দ্বিতীয় ঢেউটি ছিল ভয়াবহ। আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সাগরতলে ভূমিধসের কারণেই এই সুনামির উৎপত্তি হয়েছে। এর সঙ্গে পূর্ণিমার প্রভাব যুক্ত হওয়ায় বিপুল শক্তি নিয়ে সৈকতে আছড়ে পড়েছে সুনামির ঢেউ।
নতুন করে আবারও সুনামির আশঙ্কায় আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের বীচের কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। রোববার আবারও আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়। একটি চার্টার বিমান থেকে সুমাত্রা এবং জাভার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত সুন্দা স্ট্রেইট এলাকায় অগ্ন্যুৎপাতের ভিডিও ধারণ করা হয়। চারদিকে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ক্রমাগত আনাক ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আবারও সুনামি আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ সময়ে লোকজনকে বীচ এবং উপকূলীয় এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুনামিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। তারা আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরে। নিউজ এইটিন বলছে, আবারও সুনামির আশঙ্কায় ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ৪০ বছর বয়সী নেং সুমার্নি বলেন, ‘আমি তিনদিন ধেরে তিন সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে মেঝেতে ঘুমাচ্ছি। আমি ভয়ে আছি কারণ আমার বাসা উপকূলের কাছে।’ জেলা প্রশাসক আতমাদজা সুহারা বলেন, তিনি চার হাজার শরণার্থীকে সাহায্য করছেন। তিনি বলেন, ‘এখনও সবাই আতঙ্কিত। আমরা প্রায়ই এমন দুর্যোগে পড়ি। কিন্তু এতটা ভয়াবহ পরস্থিতি কখনও হয়নি।