আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরানো হলে ‘লাশের ওপর দিয়ে যেতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহব্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণায় যদি বিলম্ব করা হয়, তাহলে আবারও জুলাইয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটবে বাংলাদেশে। ৫ আগস্টে লাখো ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না। প্রিয় সহযোদ্ধা, আবারও দেখা হবে রাজপথে। আমাদের এ যাত্রা কঠিন হবে। আমরা লড়ে যাব আমৃত্যু।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে নগরীর নিউ মার্কেট চত্বরে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন। খবর বিডিনিউজের
চব্বিশের গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো পরিকল্পনা না থাকার কথা বৃহস্পতিবার তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রæপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ও সিইও কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি এ অবস্থানের কথা জানান। এরপর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে এক পোস্টে দাবি করেন, ক্যান্টনমেন্টে সা¤প্রতিক এক বৈঠকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন হাসনাত নিজেও। তবে আওয়ামী লীগকে ফেরানোর কথায় সায় দেননি হাসনাত আব্দুল্লাহরা। ওই ফেসবুক পোস্টের পর রাতেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে চট্টগ্রামের সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগকে পতনের মধ্য দিয়ে আমরা আপনাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছি। কোনো সুশীলতা দেখাতে নয়। আপনি যতটা না দেরি করছেন আওয়ামী লীগকে বিচার নিশ্চিত করতে, তার চেয়ে তাড়াতাড়ি করছেন আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য আপনাদের বসানো হয় নাই। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করে নিষিদ্ধ করার জন্য আপনাদের বসানো হয়েছে। আওয়ামী লীগকে যদি কোনোভাবে রাজনীতিতে আসতে দেওয়া হয় তাহলে লাশের ওপর দিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক রাসেল আহমেদ বলেন, সাত মাস পেরিয়ে গেল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয় নাই। অধিকন্তু এ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে। আমরা জীবন দিয়েছি, ভাইদের হারিয়েছি। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তা ততদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাব যতদিন পর্যন্ত এ রাষ্ট্রে ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে না।