আ.লীগের দ্রুত বিচার চায় কক্সবাজার নাগরিক কমিটি

1

কক্সবাজার প্রতিনিধি

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে কক্সবাজার নাগরিক কমিটি। এছাড়া আওয়ামী দোসর-সন্ত্রাসী কর্তৃক কটাক্ষ ও ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট বানিয়ে অপপ্রচার এবং গুপ্ত হত্যাকান্ডের প্রতিবাদও করেছেন নেতৃবৃন্দ। কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে বেলা ১১ টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, গত পরশু কক্সবাজারের এক যুবলীগ সন্ত্রাসী জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মহানায়ক শহিদ আবু সাঈদকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট প্রচার করেছে। এটি কেবল শহিদ আবু সাঈদের প্রতি অবমাননা নয়, এটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধনে সকল শহিদের আবেগ, অনুভ‚তি ও মূল্যবোধের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদাহরণ। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের গুপ্তহত্যা ও হুমকি প্রদানের ঘটনাগুলো সমাজে আতংক ও উদ্বেগ তৈরি করছে। ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী সাহসী যোদ্ধা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মুনতাকিম আলিফ,ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজবির হোসেন শিহান, এআইইউবির ওয়াজেদ আলম সীমান্ত এবং চট্টগ্রামের জসিম গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এএসএম সুজা উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার সদর থানা প্রতিনিধি কমিটির সংগঠক ওমর ফারুক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদর কমিটির সংগঠক নুরুল আবছার, খালেদ, মো. কামরুল হাসান, নিহালসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা। এছাড়াও রামু উপজেলার প্রতিনিধি জোবায়ের, সাইফুল, রিয়াদ, মঈনুর রশিদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ এবং তাদের উচ্ছিস্টভোগীরা এখনো দেশে এবং বিদেশে দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত আছে। সা¤প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের উচ্ছিষ্টভোগীদের দ্বারা ছাত্রহত্যার নির্দেশ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্তৃক অভ্যুত্থানের শক্তি তরুণদের রক্ত চেয়ে বিবৃতি চোরাগুপ্তা হামলার সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতাকেই ইঙ্গিত করে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্পেশাল ফোর্স গঠন করে এসব ঘটনার সাথে জড়িত সিলেক্টিভ কিলারদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
এসময় নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারসহ দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করণীয়/পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়ে ৬ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সকল জেলা, উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কালো টাকার অনুসন্ধান এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব জব্দ করে ফ্যাসিজমের পুনরুত্থানের হুমকি থেকে জনগণকে রক্ষা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে সব সদস্য জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থতার পরিচয় তথা অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ ও অকার্যকর বলে প্রতীয়মান করবে তাদেরকে অপসারণ করে নতুন লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে বাহিনীগুলো পুনর্গঠন, কক্সবাজারসহ সারাদেশে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্ট সমর্থক আমলাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মুক্ত নাগরিক সেবা নিশ্চিত, ইউনিয়ন পরিষদে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের যে সব জনপ্রতিনিধি দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত তাদেরকে অবিলম্বে অপসারণ করে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জনভোগান্তি দূর করে নাগরিক সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ সুরক্ষা পরিকল্পনা প্রণয়ন।
এই দাবিগুলো বাস্তবায়নে দেশের সকল বিবেকবান নাগরিক, মানবাধিকার সংগঠন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানান তারা।