নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আংশিক আহব্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ইদ্রিস মিয়াকে আহব্বায়ক এবং লায়ন হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কমিটির নেতাদের নাম ও পদবি জানানো হয়।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক করা হয়েছে আলী আব্বাসকে। আংশিক এই কমিটিতে যুগ্ম আহব্বায়ক হিসেবে আরও আছেন লিয়াকত হোসেন ও মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।
ঘোষিত কমিটির আহব্বায়ক ইদ্রিস মিয়া দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এবং লায়ন হেলাল উদ্দিন আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ছিলেন। নতুন কমিটির বাকিদের মধ্যে আলী আব্বাস জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহব্বায়ক এবং মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা সংগঠনের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে। তবে নতুন কমিটির আরেক যুগ্ম আহব্বায়ক লিয়াকত হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে দলের ভেতরে গুঞ্জন চলছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, তিনি বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহব্বায়ক লেয়াকত আলী। তবে, লেয়াকত আলী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দাবি অস্বীকার করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, লিয়াকত হোসেনের নামের বানান ভুল হয়েছে, ওটা লিয়াকত আলী হবে। তিনি বাঁশখালীর লেয়াকত আলী চেয়ারম্যানই। নতুন কমিটি অনতিবিলম্বে সবার সাথে বসে দ্রুত সংগঠন পুনর্গঠন করবে। দীর্ঘদিন এখানে (দক্ষিণ চট্টগ্রামে) এলোমেলো অবস্থা ছিল। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা সংগঠনকে ঘুচিয়ে নিবেন।
বিএনপির হাইকমান্ড আগেই জানিয়েছিল, নতুন কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের পাশাপাশি ক্লিন ইমেজের নেতাকর্মীকে জায়গা দেয়া হবে। তবে, কমিটি ঘোষণার পর অনেকে বিরূপ মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে কমিটির সমালোচনা করা হচ্ছে।
নবগঠিত দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন, সকলের সহযোগিতা নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। শান্তিপূর্ণ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলের ঐক্য একান্ত প্রয়োজন। সবাইকে সাথে নিয়েই আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লিয়াকত হোসেন আসলে বাঁশখালীর লিয়াকত আলী চেয়ারম্যান। নামের ভুল হয়েছে।
এদিকে নতুন কমিটিতে যুগ্ম আহব্বায়ক লিয়াকত হোসেনকে নিয়ে দলের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে। নামের ভুল হয়েছে দাবি করে নেতা-কর্মীরা লিয়াকত আলী চেয়ারম্যানকে যুগ্ম আহব্বায়ক বলছেন। অন্যদিকে লিয়াকত আলী চেয়ারম্যান নিজে তা অস্বীকার করছেন। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন, তবে পরে সেই বার্তা মুছে ফেলেন। পরে তিনি লিখেন ‘দক্ষিণ জেলা কমিটিতে যে লিয়াকত নাম দেখা যাচ্ছে আসলে সে আমি নই।’ এরপরে তিনি আরেক পোস্টে লিখেন, ‘আমি ২০০৯ সালে যুগ্ম আহব্বায়ক ছিলাম। ১৬ বছর পর কি আমাকে প্রমোশন দেয়া হলো? না অপমান করা হলো?
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর, আলোচিত এস আলমের বিলাসবহুল গাড়িকান্ডের পর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর থেকে কমিটিহীন অবস্থায় ছিল জেলাটি।