পটিয়া প্রতিনিধি
গেল বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটা বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলার ৩ নং আসামি পটিয়ার কাশিয়াইশ ইউপির বিতর্কিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম আদালতে হাজির না হয়ে চার দফায় সময়ের আবেদন করেছেন। গত ২৭ মে ৫ম বারের মতো সময়ের আবেদনের পর জানা গেছে এ বিষয়টি। এ মামলায় ৬ষ্ঠ বারের মতো শুনানির জন্য দিন তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত আগামী ২২ জুন। কাশেম চেয়ারম্যান পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি।
এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি মামলার ৩ নং আসামি আবুল কাশেম হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। আগাম জামিনের সময় শেষে জেলা ও দায়রাজজ আদালত চট্টগ্রামে স্বশরীরে হাজির না হয়ে তিনি দফায় দফায় পাঁচ বার সময়ের আবেদন করে সময় ক্ষেপণ করছেন। চলতি বছরের ১০ মার্চ, ৯ এপ্রিল, ২৭ এপ্রিল, ২৭ মে’র ধার্য দিনে তিনি হাজির হননি আদালতে।
আসামির আইনজীবী জানান, আসামি আবুল কাশেম শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাই বার বার সময়ের আবেদন করেছেন।
এর আগে, গত ২২ মে এ মামলায় ২১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিরেন জেলা ও দায়রাজজ আদালত চট্টগ্রাম। সে দিন জেলা ও দায়রাজজ আদালতে স্বশরীরে আসামিরা হাজির না হয়ে ২য় বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালতের বিচারক আসামিদের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেন।
পরোয়ানা জারি হওয়া পটিয়ার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের আসামিরা হলেন- মো. এরশাদ প্রকাশ সাদ্দাম মেম্বার, সামশুল আলম প্রকাশ কারা সামশু, শহিদুল আলম, সাইফুল ইসলাম অভি, নুরুল আলম মনা, আশিকুর ইসলাম খোকন, নাজমুল ইসলাম অভি, সাদ্দাম হোসেন, দীপন বড়ুয়া, শামসুল আলম, নিউটন তালুকদার, মো. জহির প্রকাশ মাছ জহির, বরুণ তালুকদার, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ফরিদুল হক ফরিদ, জসিম উদ্দিন, মো. আলম, রতন মুখার্জি, প্রভাকর বড়ুয়া টিটু, রক্তিম মজুমদার, ভোলা মজুমদার।
বাদি পক্ষের আইনজীবী ফোরকানুল ইসলাম বলেন, পটিয়ার একটি বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার মামলার ২১ জন আসামী গত ১০ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। এরপর গত ১৫ মে আদালতে তারা সময়ের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করে এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার ২২ মে শুনানির দিনধার্য করেন। বৃহস্পতিবার আসামিরা আদালতে স্বশরীরে হাজির না হয়ে ২য় বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে ২১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেন।
অন্য দিকে, গত বছরের ২৯ অক্টোবর উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা এলাকার ব্যাবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। সে মামলায় প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক হুইপ ও পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, কাশিয়াইশ ইউপির সাবেক বিতর্কিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেমসহ ১২১ জনের বিরুদ্ধে এজহারভুক্ত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এতে আরো ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় আরো আসামি করা হয়েছে- হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, হুইপের দুই ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব, কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, মোজাম্মেল হক রাজধন, নুরুল হুদা, এমরান, যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, মহিম, বাবর, জাবেদ সরওয়ার, কায়ছার, সাদ্দাম, সাইফুজ্জামান মানিক, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ছাত্রলীগ নেতা কপিল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, পটিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, ইঞ্জি. রুপক কুমার সেনসহ আরো অনেকেই।