আসলাম চৌধুরীর অনুসারীদের মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ

5

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

দীর্ঘ সময় কারান্তরীণ থেকে জেল-জলুম নির্যাতন সহ্য করার পরও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী এফসিএ’র অনুসারীরা। গতকাল সোমবার দলের মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম মনোনয়ন ঘোষণার পর সন্ধ্যা সাতটা থেকে এই মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, আসলাম চৌধুরী এফসিএ বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার নেতাকর্মী সন্ধ্যার পর থেকে মহাসড়কে উঠতে শুরু করেন। এক এক করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সীতাকুন্ড অংশের ভাটিয়ারী, জলিল গেট, কুমিরা, ছোট দারোগাহাট, রয়েল গেট, বাংলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এই মহাসড়ক অবরোধ করেন। অবরোধের কারণে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পাশে শত শত গাড়ি ও গাড়িতে থাকা হাজার হাজার যাত্রীকে চরম দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়োঃবৃদ্ধ লোকদের কষ্টের সীমা ছিল না। একইভাবে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ অবরোধ করে ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। রেললাইনের কুমিরা ও ভাটিয়ারী এলাকায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা চট্টলা এক্সপ্রেস ও নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসসহ ট্রেনগুলো সীতাকুন্ড স্টেশনে আটক করে রেখেছেন। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ও মহাসড়ক বন্ধ থাকার কারণে যানজটে আটকা পড়ে দুর্ভোগে পড়েছেন ট্রেন ও বাসে থাকা হাজার হাজার যাত্রী। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও আইন-শৃঙ্খলা কাজে উনাদের অবস্থান ছিল নিরব ও অসহায়ের মত। রাত সাড়ে দশটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ অবরোধকারীরা।
সীতাকুন্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন বাবর বলেন, ‘সীতাকুন্ড উপজেলার সৈয়দপুর থেকে সলিমপুর পর্যন্ত আনাচে কানাচে হাজার হাজার বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসলাম চৌধুরীর অনুসারী। সীতাকুন্ডের মাটিতে আসলাম চৌধুরীর বিকল্প আসলাম চৌধুরীই। কেন্দ্র যে ভুল করেছে, ভুলটি সংশোধন করে আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো।’
সীতাকুন্ড রেলওয়ে জিআরপি পুলিশের ইনচার্জ মো. আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইন সীতাকুন্ড অংশের ভাটিয়ারির দিকে বিক্ষুব্ধ অবরোধকারীরা ব্যারিকেট দেওয়ায় ও চলাচলকারী ট্রেন ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চট্টগ্রামমুখী চট্টলা এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ট্রেন সীতাকুন্ড স্টেশনে দাঁড়িয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেনগুলো চট্টগ্রামের দিকে রওনা দিবে। একইভাবে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ট্রেন দেশের বিভিন্ন জেলায় যাবে।’
সীতাকুন্ডের বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশের বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। অবরোধে আটকে থাকা দুই পাশের শত শত গাড়িতে থাকা যাত্রীদের নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত রয়েছি।’ এই অবরোধ কখন শেষ হবে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি ভাই যারা অবরোধ করছে, তাদেরকে সরানোর কোন নির্দেশনা এখনো আমরা পাইনি। কখন সড়ক সচল হবে এটাও বলতে পারছি না।’