কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দা প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামের তথ্যচিত্রটি ইউটিউব, টুইটার, ফেইসবুকসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
পরিস্থিতি আরও ‘অবনতি হওয়ার আগেই’ অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়নি আদালত। ছয় অ্যামিচি কিউরি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার বক্তব্য শোনার পর গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেয় বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ। খবর বিডিনিউজের।
আদালত বলেছে, ওই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে কীভাবে রিট আবেদনকারীর মৌলিক অধিকার লংঘিত হয়েছে, তা তিনি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আবেদনটি শুনানিতে প্রতীয়মাণ হয়েছে, আবেদনকারী ব্যক্তিগতভাবে সংক্ষুব্ধ নন।
পাশাপাশি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিটিআরসির আইনজীবীর বক্তব্য থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট, যে কোনো আন্তর্জাতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো কনটেন্ট কোনো একটি দেশের গণতান্ত্রিক সরকারের সম্মান ও মর্যাদায় আঘাত করলে সে বিষয়ে বিটিআরসি পদক্ষেপ নিতে পারে।
ফলে আদালত এই ক্ষেত্রে তার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই আদেশ দিয়েছে।
গত ১ ফেব্রূয়ারি রাতে ‘অল দা প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রতিবেদনটি প্রচার করে আল-জাজিরা টেলিভিশন।
এর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে আল জাজিরার ওই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ হিসেবে বর্ণনা করে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ওই প্রতিবেদনকে বর্ণনা করা হয় ‘সাজানো এবং দুরভিসন্ধিমূলক’ হিসেবে।
এরপর গত ৮ ফেব্রূয়ারি বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এনামুল কবির ইমন।
আল-জাজিরায় সম্প্রচারিত ‘অল দা প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে অপসারণের নির্দেশনাও চান তিনি।
গত বুধবার এ রিট আবেদনের শুনানিতে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. মজিবুর রহমান মিয়া বলেছিলেন, সুনির্দিষ্ট আইন ও কর্তৃপক্ষ থাকার পরেও গত ১০ দিনে কেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ওই ভিডিও অপসারণ করা গেল না? এখন তো দেশ ও বিদেশের কোটি কোটি লোক এটা প্রত্যক্ষ করেছে। এখন এটা বন্ধ বা অপসারণ করা না করা একই কথা।
তিনি আরও বলেছিলেন, বিটিআরসি যদি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে না পারে, তাহলে তারা ওখানে বসে আছে কেন?
আল-জাজিরার ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে আসা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ একদিন আগে বলেছিলেন, কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি হাইকোর্টে কিংবা আদালতে যায়, সেক্ষেত্রে আদালত থেকে যদি কোনো নির্দেশনা পাই, তাহলে আদালতের নির্দেশনা অবশ্যই আমরা (সরকার) পালন করব।
এই রিট আবেদনের শুনানির জন্য আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল, কামাল উল আলম, প্রবীর নিয়োগী ও শাহদীন মালিকের বক্তব্য শুনতে চায়।
তাদের মধ্যে মতিন খসরু ছাড়া বাকি সবাই মত দেন যে, এই রিট আবেদন চলতে পারে না।