ফখরুল ইসলাম নোমানী
‘মার্জার অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন’ সাম্প্রতিক সময়ে ‘মার্জার’ শব্দটি বেশ আলোচনায়। বিশেষ করে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মন্দ ব্যাংকের একীভূত করার ঘোষণার পর এ শব্দটি বেশ আলোচনায় এসেছে। ব্যাংকের আমানতকারী ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকে বুঝতে চান একাধিক ব্যাংক একীভূত হলে তাদের লাভ নাকি ক্ষতি হবে। এখানে বলে রাখা ভালো কোম্পানি বা ব্যবসার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী ‘মার্জার’ ও ‘অ্যাকুইজিশন’ সচরাচর ব্যবহৃত খুবই পরিচিত শব্দ। শুধু অন্য দেশে নয় বাংলাদেশেও প্রায়ই কোম্পানি মার্জার বা অ্যাকুইজিশনের ঘটনা ঘটছে।
কোম্পানির মার্জার ও অ্যাকুইজিশন কী কেন হয় : ইংরেজি মার্জার শব্দের অর্থ একীভূতকরণ এবং অ্যাকুইজিশন শব্দের অর্থ অধিগ্রহণ। মার্জার শব্দটি এসেছে মার্জ বা একীভূত বা একত্র করা থেকে। দুই বা ততোধিক পৃথক কোম্পানি যখন একটি কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়ে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে তখন তাকে মার্জার বা একীভূতকরণ হয়েছে বলা হয়। সোজা কথায় যখন দুটি কোম্পানি মার্জ হয় তখন দুটি নামের পরিবর্তে একটি নামে পরিচিত হয়। মার্জ হওয়ার আগের উভয় কোম্পানির মালিকই নতুন কোম্পানির শেয়ার পান। মার্জের পর নতুন কোম্পানির নামকরণের ক্ষেত্রে উভয় কোম্পানির নাম যুক্ত করে একটি নাম হতে পারে। আবার এর যে কোনো একটির নাম বা সম্পূর্ণ কোনো ভিন্ন নামেও পরিচিত হতে পারে। অন্যদিকে অ্যাকুইজিশন শব্দটি এসেছে ইক্যুয়ার বা অর্জন বা গ্রহণ বা দখল নেওয়া থেকে। আর্থিকভাবে অপেক্ষাকৃত সবল কোনো কোম্পানি যখন অন্য কোনো কোম্পানিকে কিনে নেয় তখন ওই প্রক্রিয়াকে অ্যাকুইজিশন বা অধিগ্রহণ বলা হয়। যখন কোনো কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করে তখন দুটি কোম্পানি পৃথক সত্তা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। বিক্রি হওয়া কোম্পানির মালিকরা তাদের শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানির মালিকানা নতুন মালিকদের হাতে তুলে দেন। অ্যাকুইজিশনের পর চাইলে নতুন মালিক তাঁর নিজের কোম্পানির সঙ্গে মার্জও করে নিতে পারেন। মার্জার ও অ্যাকুইজিশন দুটি পৃথক প্রক্রিয়া এবং উদ্দেশ্যও ভিন্ন। তবে একটি কোম্পানি কোনো কারণে ব্যবসায় নিজের অবস্থান হারিয়ে দুর্বল হয়ে যায় বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মালিক নিজে ওই ব্যবসায় থাকতে চান না বা ব্যবসা ছেড়ে দিতে চান তখনই মার্জার ও অ্যাকুইজিশনের ঘটনা ঘটে। তবে অপর কোম্পানির সম্মতি এ ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় বিষয়। উদাহরণস্বরূপ যখন কোনো কোম্পানি বিদ্যমান বাজার ব্যবস্থায় একই খাতের অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা পরিবেশের কারণে ভালো ব্যবসা করতে পারছে না বা লোকসান করছে তখন একই খাতের অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে একত্র হয়ে একটি কোম্পানির মতো ব্যবসা পরিচালনা করার উদ্যোগ নিতে পারে। এতে ব্যবসায় পরিচালনা খরচ কমে যায়। ফলে কোম্পানির মুনাফাও বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে উভয় কোম্পানির মালিক একীভূত হওয়ার আগে নিজেদের সম্পদ মূল্য অনুযায়ী আনুপাতিক বা সমঝোতামূলক হারে শেয়ারের মালিকানা লাভ করেন। তবে একই খাতের দুই কোম্পানির মধ্যে মার্জার হতে হবে এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আর্থিকভাবে সবল যে কোনো খাতের কোম্পানির সঙ্গে দুর্বল কোম্পানি একীভূত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায় প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে সবল কোম্পানি বড় অঙ্কের বিনিয়োগসহ ব্যবসা কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিতে পারে উপযুক্ত নেতৃত্ব বসিয়ে কোম্পানিটিকে সচল রাখা ও মুনাফা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূতকরণ কোনো নতুন ধারণা নয় বরং দেশে ও বিদেশে সফল একীভূতকরণের অনেক উদাহারণ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যেতে পারে যেসব ব্যাংক খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে অধিগ্রহণ করবে সেসব ব্যাংকের শেয়ার বিনিয়োগকারীরাই হয়তো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এ কথা মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায় যে দুর্বল ব্যাংকগুলোর উচ্চ খেলাপি ঋণ, কমদক্ষতা ও সুশাসনের অভাব, রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে না। তাই অধিগ্রহণকারী ব্যাংককে ব্যবসায়িক নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং সমস্যাযুক্ত শাখাগুলোতে সুশাসন ফেরাতে বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে। এতে অধিগ্রহণকারী ব্যাংকের মুনাফা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে ব্যাংকগুলো ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবে না ফলে ক্ষতির শিকার হবেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে তাদের শেয়ারের দরপতন হতে পারে। সরকার দুর্বল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের দায়িত্ব নিলেও অধিগ্রহণকারী ব্যাংককে দুর্বল ব্যাংকের নিয়মিত ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে যারা সঠিকভাবে নিয়মনীতি মেনে চলেনি।
ব্যাংক খাতে মার্জার কেন : বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা কমবেশি সবারই জানা আছে। কঠোরভাবে আইন পরিপালন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারায় কিছু ব্যাংক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। একদিকে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সাধারণ মানুষদের আমানত নিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে। এ ঋণের অধিকাংশই অনাদায়ী বা খেলাপি হয়ে পড়েছে। ফলে আমানতকারীদের আমানত ফেরত দিতে পারছে না। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে রুগ্ণ হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ বা একীভূত করার কথা বলছে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন তারা চান স্বেচ্ছায় ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মন্দ ব্যাংক একীভূত হোক। তবে স্বেচ্ছায় না হলে প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দিয়ে মার্জ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ব্যাংক একীভূতকরণের মূল কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করা। অথচ দুর্বল ব্যাংকগুলোর দুর্বল হওয়ার পেছনে কিন্তু বাজারভিত্তিক কোনো কারণ নেই। শুধু সুশাসনের অভাব আর আইন প্রয়োগের অবহেলাই এর জন্য দায়ী। অধিকাংশ দুর্বল ব্যাংকই শুরুতে সবল ব্যাংক হিসেবেই ব্যবসা করছিল। সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় ঋণ বিতরণের মাধ্যমে এসব ব্যাংককে দুর্বল ব্যাংকে পরিণত করা হয়েছে।
মজার উদাহরণগুলো : বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ‘মার্জার অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন’ বিষয়টি একজন রসিক শিক্ষকের কাছে পড়েছিলাম। তাঁর দেওয়া মজার উদাহরণগুলো ভুলিনি। আলোচনা শুরুর আগেই তিনি বললেন যে ‘মার্জার’ (একীভূতকরণ) হচ্ছে ‘লাভ ম্যারেজ’। ‘অ্যাকুইজিশন’ (অধিগ্রহণ) হচ্ছে বরপক্ষের ইচ্ছায় বিয়ে যা অসহায় কন্যাকে মেনে নিতে হয়। ‘টেক ওভার’ (দখল) হচ্ছে হাইজ্যাক করে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে। তখন যৌবন ছিল তাই এ রকম জুতসই উদাহরণ শুনে সবাই খুব মজা পেয়েছিলাম। দীর্ঘ সিকি শতাব্দী পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত ‘মার্জার’ দেখে শিক্ষকের দেওয়া মার্জারের উদাহরণের সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ দুটো প্রতিষ্ঠানকে মেলানোর এই কাজে অন্তত একটি পক্ষের আগ্রহ থাকতেই হবে। বর্তমান ব্যাংকপাড়ায় যা ঘটছে তাতে কোনো পক্ষেরই আগ্রহ নেই। উভয় পক্ষই এজাতীয় বিয়ে ঠেকাতে পারলে বাঁচে। কিন্তু ‘দেবদাস’-এর পার্বতীর মতো মুখে কিছু বলতে পারছে না। এগুলোকে ‘মার্জার’ বলে না। এগুলো হচ্ছে ‘ফোর্সড কনসোলিডেশন’ বা জোরপূর্বক সমন্বিতকরণ।
ব্যাংকের মার্জারে লাভ না ক্ষতি : ব্যাংক মার্জ হলে সংশ্লিষ্ট মালিক বা শেয়ারহোল্ডার আমানতকারী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাভ-ক্ষতির বিষয়টি প্রথমে আলোচনায় আসে। যেমন-প্রথম লাভ-ক্ষতির হিসাব হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মালিক বা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে। সাধারণত দুর্বল প্রতিষ্ঠানের মালিক বা শেয়ারহোল্ডাররা অপেক্ষাকৃত কম শেয়ার পান বেশি শেয়ার পান ভালো ব্যাংকের মালিক বা শেয়ারহোল্ডাররা। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকের পরিচালনা খরচ কমার পাশাপাশি ব্যবসা বাড়লে উভয় পক্ষের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ব্যাংকের আমানতকারীদের ক্ষেত্রেও মার্জ হওয়ার আগে বা পরে তাদের মূল আমানতের দায় নতুন ব্যাংকের ঘাড়েই পড়বে। ফলে এ ক্ষেত্রে হারানোর কিছু নেই। তবে দুর্বল ব্যাংক বেশি সুদে আমানত নিয়ে থাকলে তার সুদের হার কিছুটা কমতে পারে। কারণ ব্যবসার স্বার্থে নতুন ব্যাংক বাস্তবভিত্তিক সুদহার নির্ধারণ করবে। তবে আগে যেখানে আসল টাকাই ফেরত নিয়ে শঙ্কা থাকত সেখানে সুদসমেত আসল ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ফলে দুর্বল ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বিষয়টি ভালো। আর সবল ব্যাংকের আমানতকারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো পরিবর্তন হয় না। দুই কোম্পানি মার্জ হলে প্রথমত শীর্ষ পদের অনেকে চাকরি হারাবেন এটাই স্বাভাবিক। যেমন-পৃথক দুই ব্যাংকে দু’জন এমডি থাকলেও মার্জ হওয়া ব্যাংকে একজনই এমডি হবেন। ফলে একজন চাকরি হারাবেন। আবার একই এলাকায় স্বল্প দূরত্বে উভয় ব্যাংকের শাখা থাকলে একটি বন্ধ করে দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। সে ক্ষেত্রেও অনেকে চাকরি হারাতে পারেন। তবে মার্জের শুরুতে নিচের পদে কেউ চাকরি হারাবেন না এমন শর্ত থাকলে ভিন্ন কথা।
আইনি কাঠামো : একাধিক কোম্পানির একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় একটি কোম্পানি স্থাবর ও অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি ও দায় একটি স্কিমের আওতায় অপর একটি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে। অবলুপ্তির প্রক্রিয়া ছাড়াই হস্তান্তরকারী কোম্পানির আইনগত সত্তার অবসান ঘটে। হস্তান্তরকারী কোম্পানির সদস্যরা হস্তান্তর গ্রহীতা কোম্পানিতে (সম্মতিক্রমে নির্ধারিত অনুপাতে) শেয়ার অর্জন করেন। একটি একীভূতকরণ স্কিম কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর ২২৮ ও ২২৯ ধারার অধীনে আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যকর করা যায়। অনুমোদনের আগে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সদস্যদের সাধারণ সভা আয়োজন করতে হয়। কোম্পানি প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করে থাকলে প্রেফারেন্স শেয়ার হোল্ডারদের আলাদা সভা করতে হয়। প্রেফারেন্স শেয়ারে লভ্যাংশের নিশ্চয়তা থাকে। সদস্যদের সভা আয়োজন থেকে কোম্পানিকে অব্যাহতি দেওয়া যায় না। কোম্পানির পাওনাদারদের আলাদা সভা আয়োজন করতে হয়। তবে আদালত কোম্পানির আবেদনক্রমে উপযুক্ত ক্ষেত্রে পাওনাদারদের সভা আয়োজন হতে অব্যাহতি দিতে পারেন। মোদ্দা কথা : দুই কোম্পানি মার্জ হয় ব্যবসায় ভালো হওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে উভয় কোম্পানির পারস্পরিক স্বার্থ বিবেচনায় লাভজনক ভাবে কোম্পানির রূপান্তর হলে সে মার্জ প্রক্রিয়া থেকে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। অন্যথায় একজনের সংকট অন্যজনে স্থানান্তরিত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। বর্তমান কোম্পানি আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে মার্জার প্রক্রিয়ার জন্য হাইকোর্টের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। হাইকোর্টের অনুমোদন পেলে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে তা কার্যকর হয়। এসব প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ হলে এক বছরের কম সময়ে মার্জার কার্যকর করা প্রায় অসম্ভব। নানা জটিলতায় সাধারণত এ কাজে দুই বছর বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। ফলে ব্যাংকের মার্জারের কথা বাংলাদেশ ব্যাংক বললেও বাস্তব কারণে আগামী দুই বছরের মধ্যে ব্যাংক খাতে একাধিক ব্যাংক মার্জ হয়ে একটি হওয়া দেখতে অন্তত দুই বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।
ব্যাংকের একীভূতকরণ অথবা অধিগ্রহণের নির্দেশনায় ও এর বাস্তবায়নে দুটি পক্ষ সবচেয়ে ‘আতঙ্কিত’ হতে পারেন। প্রথমত আমানতকারী এবং দ্বিতীয়ত একীভূতকৃত ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী। সে ক্ষেত্রে অনেকে চাকরি হারাতে পারেন। তবে মার্জের শুরুতে নিচের পদে কেউ চাকরি হারাবেন না এমন শর্ত থাকলে ভিন্ন কথা। আমানতকারীদের ভয় থাকবে জমাকৃত আমানতের সুরক্ষা। তবে সে দায় একীভূত নীতিমালায় সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকতে পারে এবং উভয় শ্রেণিকেই আস্থায় আনা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অনৈতিক চাপ এবং রাজনৈতিক হিংসা-প্রতিহিংসা অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে মালিকপক্ষের দাবিদাওয়া। একীভূতকরণের মাধ্যমে মালিকপক্ষ দায়মুক্তি চাইতে পারে। আবার তাদের মূলধন শেয়ারের বিপরীতে বাজারমূল্যের চেয়ে উচ্চমূল্যও দাবি করতে পারে। শুধু ব্যাংক একীভূতকরণই তাই সমস্যার সমাধান নয় কার স্বার্থে এবং কোন শর্তে করা হচ্ছে সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে।
লেখক : লেখক ও কলামিস্ট