আরব আমিরাতে যেকোনো সময় ভিসা খোলার সম্ভাবনা

1

সাইফুল ইসলাম তালুকদার

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশ ভিসা সহজীকরণ নিয়ে আলোচনা করছে বলে জানিয়েছেন, দুবাইয়ে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো: রাশেদুজ্জামান।
দুবাইয়ে বাংলাদেশের ৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা ইউএই সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সহজীকরণ বিষয়ে আলোচনা করছি।” অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে একথা জানান মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুবাই অফিসের প্রটোকল ও অপারেশনের প্রধান মোহাম্মদ আল বাহরি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ এবং অন্য দেশের ক‚টনীতিকসহ প্রায় ৩০০ অতিথি।
কবে নাগাদ বাংলাদেশিদের জন্য আরব আমিরাতের ভিসা খুলবে সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু না বললেও, কনসাল জেনারেল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি আমিরাত সরকারের উচ্চ মহল থেকে এনিয়ে ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। তারা চান, বাংলাদেশিরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাফল্যের গল্পের অংশ হোক।
কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান জানান, ইউএই-তে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১০ লাখের মতো। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এই সংখ্যা নতুন করে আর বাড়েনি।
প্রবাসীরা জানিয়েছেন, গেল ছয়-সাত বছর ধরে এ্যামপ্লয়মেন্ট ভিসা বন্ধই আছে আরব আমিরাতে। এর মধ্যে গত বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় দুবাইয়ে প্রবাসী শ্রমিকরা মিছিল করে। এরপর তাদের আটক করেছিলো আরব আমিরাত পুলিশ। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে, বেশ কজন শ্রমিক মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরেন। কিন্তু এরপর থেকে আরব আমিরাতে বাংলাদেশীদের জন্য প্রায় সব ধরনের ভিসার দরজা পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। কেবল হাউজ মেট ক্যাটাগরিতে ভিসা খোলা রেখেছে দেশটি।

কনস্যুলার সেবার সম্প্রসারণ :
রাশেদুজ্জামান জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য সম্প্রতি বেশ কিছু নতুন কনস্যুলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “আমরা প্রতি সপ্তাহে তিন দিন ‘শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার’ বিভিন্ন আমিরাতে বিশেষ কনস্যুলার সেবা দিচ্ছি। আমাদের দল আমিরাতের অন্য প্রদেশ শারজাহ, আজমান, উম্ম আল কোয়াইন, ফুজিরাহ, রাস আল খাইমাহ এবং আবুধাবি দূতাবাসের উদ্যোগে আবুধাবি এবং আল-আইনে গিয়ে সরাসরি কর্মীদের কনস্যুলার সেবা দিচ্ছে, যারা কনস্যুলেটে আসতে পারেন না- এতে তাদের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া, আমরা কনস্যুলেটের ভেতরে একটি হেল্প ডেস্ক চালু করেছি কারণ অনেক অশিক্ষিত কর্মী দালালদের প্রতারণার শিকার হন, হয়তো সঠিক তথ্য না জানার কারণে,” জানান কনসাল জেনারেল।
এই মোবাইল সেবার মাধ্যমে তিন দিন ধরে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সবধরনের কনস্যুলার সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরো যোগ করে বলেন, শুধু বাণিজ্য নয়, আমরা ইউএই থেকে বিনিয়োগ চাই বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি (ওঈঞ), নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অবকাঠামো, বন্দর সুবিধা, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং হালাল মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে, যা বাংলাদেশ থেকে অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা যাবে।
আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে একে অপরের প্রতি সহায়তার মনোভাব নিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করার আহŸান জানিয়ে এবং তিনি প্রবাশিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা সুশৃংখল জাতি হিসেবে বিদেশের মাটিতে পরিচিতি লাভ করবো। যাতে বিদেশীরা বলতে পারে আমরা সুশৃংখল জাতি এবং আমরা নিয়ম মেনে চলি। এই পরিচিতি আমাদের তৈরি করতে হবে।

লেখক : সভাপতি, প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি, ইউএই