আমিরাতে অবস্থানের সময়ে দেশে মামলার আসামি

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলা’র ঘটনা নিয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ৯ ডিসেম্বর দায়ের হওয়া ওই মামলায় ৩০ নম্বর আসামি করা হয় হাটহাজারী উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেনকে। অথচ তিনি ঘটনার দিন শারজায় ছিলেন। ৮ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন। ১৩ আগস্ট তিনি শারজায় ফিরে যান। বিদেশে অবস্থান করা অবস্থায় দেশের ঘটনায় মামলার আসামি হওয়া নিয়ে তিনি হতভম্ব।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সমিতি শারজার সাবেক সভাপতি ও সংযুক্ত আবর আমিরাত বিএনপির সভাপতি শরফত আলী লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে প্রবাসে থাকায় প্রবাসী ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন কখনও রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হননি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে তিনি একদল দুর্বৃত্তের হাতে বারবার হয়রানির মুখে পড়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক পরিচয়ে কখনও তাকে মামলায় জড়ানোর ভয়, কখনও চাঁদা দাবি সবই করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী শাহাদাত অনলাইনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমি জাপানে থাকা অবস্থায় আমার পরিবার থেকে আমাকে জানানো হয়, বাড়িতে আমাকে খুঁজতে পুলিশ গেছে।পুলিশ জানিয়েছে কোতোয়ালী থানায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কিন্তু যে ঘটনায় মামলা দায়ের হয় সে ঘটনার সময় ছিল ৪ আগস্ট। অথচ ওই সময় আমি আরব আমিরাতে ছিলাম। অথচ আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িতও নই। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট আরব আমিরাত থেকে চট্টগ্রামের নিজ বাড়িতে আসি। ওইদিন সন্ধ্যায় আমি হাটহাজারীতে ছাত্রআন্দোলনে জড়িত বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠকও করি। পরে ১২ আগস্ট আরব আমিরাতে ফিরে যাই।
শাহাদাত বলেন, শারজায় বাংলাদেশ কমিউনিটি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালানো মোদাচ্ছের শাহ-ই মূলত প্রভাব খাটিয়ে এ মামলায় আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এই মামলায় আসামি করার কারণে শাহাদাত হোসেন চরমভাবে অপমানিত বোধ করছেন। হয়রানির কারণে প্রবাসে তিনি ব্যবসায় মন বসাতে পারছেন না। তার পরিবারও এই অবস্থায় মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগছে।
আরব আমিরাতের বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা আলম আব্দুল গফুর বলেন, প্রবাসে আমরা যারা একটু ভালো অবস্থানে আছি, এদের বেছে বেছে দেশে মামলায় নাম ঢুকিয়ে বাণিজ্য করছে রাজনৈতিক নেতা নামধারী কিছু লোক। আমরা দেশের জন্য প্রবাসে রাতদিন কষ্ট করছি, অথচ নামধারী কিছু দলীয় লোক দেশ থেকে আমাদের হয়রানি করছে। আমরা অনেক ব্যথিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আবর আমিরাত বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক শরাফত আলী, মোহাম্মদ লোকমান, জাহেদুল আলম, মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, শাহাদাত হোসেন প্রায় ৩২ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গত ১৮ বছর ধরে তিনি একইসঙ্গে জাপানেও ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। গত ৮ বছর ধরে তিনি শারজা ইউজড কার অ্যান্ড স্পেয়ার পার্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সমিতি শারজার অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন।