আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরো গতিশীল করবে এ ল্যাবরেটরি

0

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর ১০তলা নতুন ভবন উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের শিল্প, বাণিজ্য ও ভোক্তা সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে নগরীর আগ্রাবাদে স্থাপিত এই ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত’র মাতা মোছা. কহিনুর আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে এ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, বিএসটিআই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিল্প-বাণিজ্যের গতিশীলতা এবং ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। চট্টগ্রামে নির্মিত বিএসটিআই-এর এই আধুনিক ভবন এবং অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতি আনবে। এতে করে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে। পর্যায়ক্রমে এই ল্যাবরেটরিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা হবে, যাতে এখান থেকেই সর্বোচ্চসংখ্যক পণ্যের মান নির্ধারণ ও পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা যায়। তিনি ভবনের বৈদ্যুতিক, প্রকৌশল, রাসায়নিক ও ফিজিক্যাল ল্যাব পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবনের কারিগরি সক্ষমতা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত’র মা মোছা. কহিনুর আক্তার বলেন, শান্ত একটি শোষণমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখত। সে চেয়েছিল প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হোক, যুবকদের মেধা ও শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন হোক। আমার সন্তান যে লক্ষ্য নিয়ে শহীদ হয়েছে, সেই লক্ষ্য যেন একদিন পূর্ণ হয়, এটাই আমার কামনা।
স্বাগত বক্তব্যে বিএসটিআই’র মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, চট্টগ্রামে বিএসটিআই’র অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিসহ ১০তলা ভবন নির্মাণ একটি মাইলফলক। ১৯৫৬ সালে বিএসটিআই কাজ শুরু করে, ৮০’র দশকে কিছু সংস্কার হয়েছিল, কিন্তু এবার পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে গেল। এখন ৩১৫টি পণ্যের মান নির্ধারণ ও পরীক্ষা চট্টগ্রাম থেকেই করা যাবে, যা আগে ছিল মাত্র ৯২টি।
শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মান-সংশ্লিষ্ট চুক্তি ও বিএসটিআই ল্যাবরেটরির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি (অ্যাক্রেডিটেশন) অর্জনের ফলে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা বেড়েছে। এখন বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গণপূর্ত বিভাগের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কিউ এম শাহজালাল মজুমদার বলেন, উন্নত বিশ্বের আদলে নির্মিত হয়েছে এই ভবন। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সেবা-সুবিধা এতে সংযুক্ত করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
২০১৫ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি টাকা। নতুন ভবনের মাধ্যমে এখন চট্টগ্রাম থেকেই ৩১৫টি পণ্যের মান পরীক্ষা ও সার্টিফিকেশন সম্ভব হবে। ফলে আমদানি-রফতানিকারকদের ঢাকামুখীতা কমবে, সময় ও খরচ বাঁচবে, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া হবে সহজ ও দ্রæত। এই আধুনিক ল্যাব চট্টগ্রামকে মান পরীক্ষায় নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, চট্টগ্রাম চেম্বার প্রতিনিধি, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসটিআই’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।