ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
৫ম জাতীয় চা দিবস ছিল গতকাল। এ দিবসে বছরের শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী শ্রমিক হিসেবে দেশসেরা পুরস্কার গ্রহণ করেন চা শ্রমিক জেসমিন আকতার। তিনি ঢাকা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় চা দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এর হাত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। জেসমিন ফটিকছড়ির নেপচুন চা বাগানের একজন সফল চা শ্রমিক। এবারসহ টানা দ্বিতীয়বার দেশসেরা হয়েছেন নেপচুন চা বাগানের এ শ্রমিক। ফলে সারাদেশের ১৬৮টি চা বাগানের মধ্যে শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (শ্রমিক সম্পর্কিত পুরস্কার) এর স্থান টানা তিনবার এম এম ইস্পাহানি গ্রæপের নেপচুন চা বাগানের দখলে। ২০২২ সালেও দেশসেরা শ্রমিক নির্বাচিত হয়েছিলেন নেপচুন চা বাগানের উপলক্ষী ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানে অতিথি পর্যায়েও বক্তব্য রাখেন আলোচিত জেসমিন আক্তার (গত বছরের দেশসেরা চা পাতা চয়নকারী হওয়ার কারণে)।
এম এম ইস্পাহানি গ্রুপের নেপচুন চা বাগান স‚ত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে ফটিকছড়ি উপজেলায় ২৭০০ একর আয়তন বিশিষ্ট পাহাড়-সমতল এলাকায় গড়ে উঠে এম এম ইস্পাহানি গ্রুপের এই নেপচুন চা বাগান। ২০০৯ সালে বৃক্ষ রোপণে দেশসেরা চা বাগান মনোনীত হয় নেপচুন চা বাগান। ২০২০ সালে গ্রিন ফ্যাক্টরি এওয়ার্ড মনোনীত হয় নেপচুন চা বাগান। দীর্ঘ ৬৫ বছরে নেপচুন চা বাগান নানা সফলতার পাশাপাশি চা উৎপাদনেও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে চলছে।
২০২২ সালের চা পাতা চয়ন বা উত্তোলনে দেশসেরা চা শ্রমিক নির্বাচিত হয়েছিলেন উপলক্ষী ত্রিপুরা। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) সারাদেশের ১৬৮টি চা বাগানের মধ্যে চা পাতা উত্তোলন বা চয়নে সেরা শ্রমিক নির্বাচিত হয়েছেন জেসমিন আক্তার।
দেশসেরা চা শ্রমিক নির্বাচিত হওয়ার আনন্দে আবেগাপ্লæত জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আমি গত ৪২ বছর ধরে একই বাগানে বিশ্বস্ততার সহিত চা পাতা উত্তোলন করে আজ দেশসেরা হতে পেরে সত্যি আনন্দিত। গত বছরে (২০২৪ সালে) আমি ৩৪৯৩৭ কেজি চা পাতা উত্তোলন করতে সক্ষম হই। ২ পুত্র, ১ কন্যা ও স্বামীসহ আমার সংসারের ৮ জন সদস্য এই নেপচুন চা বাগানে কর্মরত।’
এম এম ইস্পাহানি গ্রুপের নেপচুন চা বাগানের ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘দেশের ১৬৮টি চা বাগানের মধ্যে নেপচুন চা বাগান থেকে টানা তিনবার দেশসেরা চা শ্রমিক বা পাতা চয়নকারী নির্বাচিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। শুধু তাই নয় সম্প্রতি হালদাভ্যালি চা বাগানে ৩টি চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে ওপেন চা পাতা উত্তোলন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩০ মিনিটে ১৩,২৫০ কেজি চা পাতা চয়ন (উত্তোলন) করে জেসমিন আক্তার প্রথম হওয়ার গৌরব চূড়ান্তভাবে ধরে রাখেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, চা শিল্পে শুল্ক করের যে অব্যবস্থাপনা রয়েছে, এই অব উপস্থাপনাকে রুখে দিতে চাই।
উপদেষ্টা বলেন, দেশে চা রপ্তানিতে নতুন দাঁড় উন্মোচন হয়েছে। তবে চাই শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন। অর্গানিক চা ও ব্র্যান্ডিং এবং রপ্তানি কৌশল নিয়ে সরকার কাজ করছে। চা শিল্পের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে আমরা সজাগ।