পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক
সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। এমন ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটি, জাকের-সৌম্য-নাসুমের ক্যামিওতে লড়াকু সংগ্রহ পায় টাইগাররা। এরপর বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে সেটা ডিফেন্ড করে জয় তুলে নেয় শান্তর দল। এই ম্যাচ দিয়ে শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৯ বছর পর জিতলো বাংলাদেশ।
গতকাল শারজাহতে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানদের ৬৮ রানে হারায় বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ওই রান তাড়া করতে নেমে ১৮৪ রানে অলআউট হয়েছে আফগানরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ২৮ রানেই হারিয়ে ফেলে প্রথম উইকেট। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া তানজিদ হাসান ১৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রান করে ক্যাচ দেন আল্লাহ মোহাম্মদ গজানফরের বলে। এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে জুটি গড়েন অধিনায়ক শান্ত। ৯৩ বলে ৭১ রানের এই জুটি ভাঙে সৌম্য যখন রশিদ খানের বলে এলবিডবিøউয়ের ফাঁদে পড়েন। ২ চার ও সমান ছক্কায় ৪৯ বলে ৩৫ রান করে আউট হন তিনি। রিপ্লেতে অবশ্য দেখা গেছে, রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন সৌম্য; বল পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। এরপর শান্তর সঙ্গী হন সহ-অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের জুটিও পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু হুট করে ৩২ রানের ব্যবধানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শুরুটা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে। ৩৩ বল খেলেও কোনো বাউন্ডারি হাঁকাননি তিনি, করেন ২২ রান। রশিদ খানের বলে বোল্ড হয়ে যান মিরাজ। এরপর কিছুটা ধীর ইনিংস খেলা শান্তও বিদায় নেন। নাগাইলিয়া খারোটির বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি নবীর হাতে। এর আগে ১১৯ বলে করেন ৭৬ রান। এ দুজনের বিদায়ের পর তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ফেরেন দ্রæত। ১৬ বলে ১১ রানে হৃদয় ও ৯ বলে ৩ রানে আউট হন রিয়াদ। তাদের দুজনের বিদায়ের পর কিছুটা হাল ধরেন অভিষিক্ত জাকের আলি অনিক ও নাসুম আহমেদ। ৪১ বলে ৪৬ রানের জুটি ছিল এই দুজনের। ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৭ বলে ৩৭ রান করে আউট হন গজানফার। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৭ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামা জাকের আলি। রান তাড়ায় নামা আফগানিস্তানকে পাওয়ার প্লেতে সুবিধা করতে দেয়নি বাংলাদেশ। শুরুতেই উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাটের কানায় লেগে যায় ¯িøপে দাঁড়ানো সৌম্যর হাতে। এরপরের ওভারটি মেডেন দেন তাসকিন। সবমিলিয়ে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪০ রান তোলে আফগানিস্তান, হারায় একটি উইকেট। যদিও সেটি দুটিই হতে পারতো। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের করা পাওয়ার প্লের শেষ বলে ক্যাচ ছাড়েন উইকেটরক্ষক জাকের আলি। চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট পেয়েছিল বাংলাদেশ, এরপর ভালো বোলিং করেও সেটির দেখা পাচ্ছিলেন না বোলাররা। ১৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই তিনি তুলে নেন সেদিকউল্লাহ আতালকে। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন মিরাজ, আতাল ফেরেন ৫১ বলে ৩৯ রান করে। এরপর থেকে আফগানিস্তান অনেকটা নিয়মিতই উইকেট হারিয়েছে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ বলে ৫২ রান করা হাশমাতুল্লাহ শহিদী শিকার হন রান আউটের। নিচের দিকে দলটির ভরসা ছিলেন মোহাম্মদ নবী ও গুলবাদিন নাইব। তাদের মধ্যে ২৫ বলে ২৬ রান করে শরিফুলের বলে নাইব ও ২১ বলে ১৭ রান করে মিরাজের বলে সাজঘরে ফেরেন নবী। বাংলাদেশের পক্ষে ৮ ওভার ৩ বল হাত ঘুরিয়ে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন নাসুম। দুই উইকেট করে পান মিরাজ ও মোস্তাফিজ।