আন্দোলনকারীদের সচিবালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি

2

সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সচিবালয়ের কর্মচারীরা যেভাবে বেআইনী সমাবেশের মাধ্যমে অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত তা কঠোর হস্তে দমন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও বদলী করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণকে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহাবান জানিয়ে বলেন, ১৯৯৬ সালে এই সরকারি কর্মচারীরা জনতার মঞ্চ করে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।
গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সচিবালয়ে আমলারা আন্দোলন করছে। কারণ ইউনূস সরকার ‘সরকারি চাকরিবিধি আইন’ নামে একটা আইন পাশ করেছে। এই আইন অনুযায়ী কোন সরকারি কর্মকর্তা ইচ্ছে করে কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত না থাকলে, ঠিকমতো কাজ না করলে বা ঘুষ নিলে তাদের বেতন কমিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হতে পারে। অথচ এতদিন শুধুমাত্র বদলি করা হতো। এখন ডিরেক্ট বরখাস্ত হতে পারে এজন্যে আমলারা আন্দোলন করছে। কারণ তারা জানে একবার এ আইন পাশ হলে তারা আর ইচ্ছেমতো ঘুষ খেতে পারবে না, দুর্নীতি করতে পারবে না। সচিবালয়ের চারদিকের রাস্তা ওরা ব্লক করে রেখেছে, অফিস বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমনকি ড. ইউনূসকেও ঠিকমতো কাজ করতে দিচ্ছে না। অথচ জুলাই আন্দোলনের সময় এই আমলারা একটাও জনগণের পক্ষে ছিল না। রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক, মেসের খালারা পর্যন্ত ছাত্রদের সাথে রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু এই আমলারা নামে নাই। কারণ হাসিনার পতন হলে ওদের ঘুষের দরজাও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ওরা হাসিনার পক্ষে থেকে বুঝিয়েছে- আপা আমরা আপনার সাথে আছি। ড. ইউনূস আসার পরপরই ওদেরকে স্যার বলে ডাকা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে, কারণ তারা জনগণের কর্মচারী। একারণেও ওরা ইউনূস সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমলাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে ইউনূস সরকার ওদের সম্পত্তির হিসাব চাওয়ায় ওরা নিজেরাই সচিবালয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আর এখন ওরা চাচ্ছে ইউনূস সরকার যাতে কোনভাবেই এই আইন পাশ করতে না পারে। কারণ এই আইন পাশ হলে ওরা আর টেবিলের নিচ দিয়ে টাকার বান্ডিল নিতে পারবে না, লাঞ্চের পর আসেন বলে ঝাড়ি দিতে পারবে না। ওরা আসলে চায় জনগণ ওদের কাছে জিম্মি থাকুক। একটা কাজের জন্যে তোষামোদি করুক। আপনি জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে যান ওরা আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখবে। বুঝাবে এটা সংশোধন হবে না, অথচ পরে টাকা দিলে ঠিকই করে দিবে। তাও আবার কয়েকবার ওদের হাতেপায়ে ধরা লাগবে। এজন্যেই ইউনূস সরকার এই আইনটা করতে চাচ্ছেন যাতে আমলাদের হাতেপায়ে ধরতে না হয়, ঘুষ দিতে না হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর শেখ মুজিবের একটা ভুল ছিল মোনায়েম খানের আমলাদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করা। আর ৫ আগস্টের পর ড. ইউনূসেরও ভুল হচ্ছে হাসিনার কর্মচারীদের নিয়েই দেশ চালনা করা। হাসিনার এই কর্মচারীদের কারণেই সংস্কার হচ্ছে না, ওরা করতে দিচ্ছে না। সবকিছুতে দেরি করাচ্ছে। আজকে জনগণকে এক হতে হবে। ড. ইউনূসের এ আইনের পাশে দাঁড়াতে হবে। নয়তো সামনে কোন একদিন সরকারি অফিসে গেলে এই আমলারাই আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখবে, আপনার কাছে ঘুষ চাইবে। তারপর বিরক্তি নিয়ে ঝাড়ি দিয়ে বলবে- যানতো লাঞ্চের পর আসেন। এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছেন সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা হলেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, সিএমইউজের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক নসরুল কদির, ড্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সেলিম জানে আলম, সাংবাদিক নেতা কামরুল হুদা ও রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। খবর বিজ্ঞপ্তির