আনোয়ারায় অবাধে চলছে অবৈধ বালুর ব্যবসা

1

খালেদ মনছুর, আনোয়ারা

আনোয়ারায় শঙ্খ নদীতে অর্ধশত ড্রেজার দিয়ে অবাধে চলছে অবৈধ বালুর ব্যবসা। উপজেলার জুুঁইদন্ডী, বরুমচড়া, ইছাখালী, তৈলারদ্বীপ এলাকার বিভিন্ন স্পটে প্রতিদিন অবৈধ বালুর রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু চক্র। মাঝেমধ্যে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করলেও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ব্যবসা।
জানা গেছে, বরুমচড়া ইউনিয়নে নির্মিত দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বালু মহাল। প্রতিদিন শঙ্খ নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে মহালে এনে শতাধিক ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বালু বিক্রি হয়। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ২১ কোটি টাকার এ হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম, খালের বেড়িবাঁধ ও সড়ক।
এছাড়া জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে শঙ্খ নদীর তীরে অন্তত অর্ধডজন অবৈধ বালু মহাল রয়েছে। হাইলধর ইউনিয়নের দক্ষিণ ইছাখালীতে শঙ্খ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অবৈধ বালু মহাল। এসব বালু মহালের ড্রেজারের কারণে ভাঙছে নদী। প্রতিদিন শত শত বালুর ট্রাক চলাচলের কারণে ক্ষতি হচ্ছে সড়কের, ধুলাবালিতে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। স্কুলগামী শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ।
জানা যায়, ২০২০ সালে বরুমচড়া ইউনিয়নের ভরাশঙ্খ খালের উপর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম উদ্বোধন করা হয়। এ ড্যাম ওই এলাকায় কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। তবে এ অবৈধ বালু মহালে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে এলাকার সড়ক। ভাঙনের কবলে পড়েছে খালের বেড়িবাঁধ। নষ্ট হয়েছে ড্যাম এলাকার সৌন্দর্য্য। ধুলোবালিতে ভরে গেছে পুরো এলাকা।
স্থানীয় কৃষক আবুল বশর জানান, বরুমচড়া ভরারচর ধান ও সবজি চাষের উৎকৃষ্ট জায়গা। এখানে চাষাবাদের জন্য মিঠা পানি ধরে রাখতে এ হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যামটি নির্মাণ করা হয়। বালু ব্যবসার কারণে এটি এখন হুমকির মুখে।
জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের অটোচালক মো. জহির বলেন, বালুর গাড়ির জন্য অটো চালাতে পারি না। সড়কগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ধুলাবালিতে অসহনীয় অবস্থা।
এ বিষয়ে বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমানুর রহমান জানান, অবৈধ বালু মহালের কারণে হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যামের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। এর আগে কয়েকবার প্রশাসন অভিযান চালালেও বালু মহাল বন্ধ হয়নি।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু মহালে অভিযান চালিয়ে অনেকবার জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও এসব বন্ধ করা যাচ্ছে না।