আধুনিক চট্টগ্রামের বাস্তবায়ন দেখতে চায় চট্টগ্রামবাসী

2

অন্তর্বর্তী সরকার এ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের উন্নয়নে ৫০ হাজার ৭৭ কোটি টাকার ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক, যার মধ্যে রয়েছে মেগা প্রকল্পও। কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি রেল কাম সড়কসেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৩ হাজার ৫২৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৫ হাজার ১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প ও ২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কাট্টলী ক্যাচমেন্ট স্যানিটেশন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলে পত্রিকান্তরে জানা গেছে। এই খসড়া নিয়ে শীঘ্রই সেক্টরভিত্তিক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সভা ও গণশুনানির আয়োজন করা হবে, যাতে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা যায়। এটা চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুসংবাদ।
সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম জানিয়েছেন, এই মাস্টারপ্ল্যান একটি সমন্বিত, অংশগ্রহণমূলক ও বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ, যা সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। মাস্টারপ্ল্যানটি যেন বাস্তবায়নযোগ্য, টেকসই, পরিবেশবান্ধব এবং ভবিষ্যতের চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সিডিএ।
সিডিএ’র উপ-প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আবু ঈসা আনছারী সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রকল্পটি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় এবং এর মেয়াদকাল ২০২৬ সালের জুন মাসে শেষ হবে। এরইমধ্যে প্রকল্পের ড্রাফট ফাইনাল রিপোর্ট প্রস্তুতপূর্বক দাখিল করা হয়েছে এবং এই রিপোর্টের ওপর এই টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। পাহাড় কেটে আবাসন গড়ে তোলা, খাল-নালা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ, খেলার মাঠে ভবন গড়ে পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ, চসিক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত অর্থবছরে চারটি প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা। এবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দ কমেছে।
এদিকে দেশে প্রথম মনোরেল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশি ওরাসকম কনস্ট্রাকশন ও আরব কন্ট্রাক্টরস নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ তিনটি রুটে মনোরেল নির্মাণ করতে খরচ হবে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। বিনিয়োগ করা হবে এনএএস ইনভেস্টমেন্ট ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইজিপ্টের মাধ্যমে। মনোরেল যানজট নিরসনের পাশাপাশি চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশ, পর্যটন ও ব্যবসাবান্ধব নগরীতে রূপান্তর করার দিকে এগিয়ে নেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। নতুন মাস্টারপ্ল্যানে চট্টগ্রাম নগরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সমন্বয়। চট্টগ্রামবাসী আধুনিক চট্টগ্রামের বাস্তবায়ন দেখতে চায়।