আদালত থেকে চুরি মামলার নথি মিলল ভাঙারি দোকানে

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম আদালতে সরকারি আইন কর্মকর্তার (মহানগর পিপি) কার্যালয় থেকে উধাও হওয়া মামলার নথিপত্রগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকার এক ভাঙারি দোকানের গুদাম থেকে প্রায় নয় বস্তা নথি উদ্ধার করা হয়। এ সময় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওইসব নথিপত্র পরিত্যক্ত মনে করে আদালতের এক চা-দোকানের কর্মচারী সেগুলো ভাঙারি দোকানে বিক্রি করে দিয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম জানায়নি পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল করিম জানান, ‘আদালত থেকে নথিপত্র চুরির ঘটনার পর থেকেই সেগুলো উদ্ধার করতে আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। খবর পেয়ে পুলিশ একটি ভাঙারি দোকান থেকে ওসব নথিপত্র উদ্ধার করে। এ সময় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। সে ওখানে একটি চা দোকানে কাজ করে। আদালতে পিপি অফিসের সামনে পড়ে থাকা নথিপত্রগুলো সে নিয়ে ভাঙারি দোকানে বিক্রি করেছে। কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছি। বাকি নথিপত্র উদ্ধার করতে আমরা তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। তদন্তের স্বার্থে তার নাম এখন বলতে পারছি না।’
চট্টগ্রাম আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় মহানগর পিপি মফিজুল হক ভ‚ঁইয়ার কার্যালয় থেকে এক হাজার ৯১১টি মামলার নথি (কেস ডকেট বা সিডি) উধাওয়ের ঘটনা গত রবিবার (৫ জানুয়ারি) জানাজানি হয়। এরপর পিপি কোতোয়ালী থানায় এ সংক্রান্তে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, হত্যা, মাদক, চোরাচালান, অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ প্রায় এক হাজার ৯১১টি মামলার নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এগুলো মহানগর পিপির এখতিয়ারে থাকা অন্তত ৩০টি আদালতে চলমান মামলার নথি। বিষয়টি অবগত হয়ে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের একজন বিচারপতিকে তদন্তের আদেশ দেন। বিচারপতি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের কোনো এজলাস বা চেম্বার থেকে কোনো ফৌজদারি মামলার নথি চুরি হয়নি। সংবাদপত্রে যে এক হাজার ৯১১টি কেস ডকেট চুরির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের বারান্দা থেকে চুরি হয়েছে। কেস ডকেটগুলি ছিল ২০১৫ সালের আগের ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত। বেশিরভাগ মামলা এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এছাড়া ফৌজদারি যে কোনো মামলার কেস ডকেটের একটি কপি সংশ্লিষ্ট সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকে। এর ফলে আদালতে বিচারাধীন কোনো ফৌজদারি মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।