আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারিয়েছেন টিউলিপ

1

দুদকের তলবে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির না হয়ে শেখ হাসিনার ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। ‘ঘুষ’ হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বক্তব্য জানতে তাকে গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার টিউলিপের ঢাকার ধানমন্ডি ও গুলশান-২ এর ঠিকানায় এ ব্যাপারে নোটিস পাঠানো হয়। খবর বিডিনিউজের
টিউলিপ সিদ্দিকের দুদকে হাজির না হওয়া প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হারালেন। শুধু টিউলিপ নন, নিয়মানুযায়ী সবাই সে সুযোগ পাবেন। কেউ উপস্থিত না হলে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিকভাবে যে পদ্ধতি, সেটা অনুসরণ করা হবে। প্রত্যেক নাগরিকের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যেকোনো নাগরিকই সেটা পাবেন। তিনি বলেন, আমাদের অন্যান্য অভিযুক্তদের মতো তিনিও একজন অভিযুক্ত। আজকে তার দুদকে এসে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি আসেননি। তিনি নিজে এটা ফেস করবেন, আমরা আমাদের পদ্ধতিগতভাবে এগিয়ে যাব। একজন মামলার আসামি অনুপস্থিত থাকলে ‘ইন অ্যাবসেন্স ট্রায়াল’ হয়। পরবর্তীতে তিনি যদি আদালতে হাজির না হন, আমরা আন্তর্জাতিক যে পদ্ধতি রয়েছে, সেটা অবলম্বন করব। যদি আমরা স্বাভাবিকভাবে তাকে না পাই, তিনি যেহেতু বিদেশি নাগরিক, কিংবা পলাতক হন, সেক্ষেত্রে আমরা ইন্টারপোলের সহায়তায় রেড অ্যালার্ট জারি করব। গত বছরের ৫ অগাস্ট আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি আওতায় ফেরানো সম্ভব বলে মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান। এজন্য দুদক আইনি ও প্রক্রিয়াগতভাবে কাজ করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করলেও এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।
দুদক চেয়ারম্যান মোমেন বলেন, কয়েকটা দেশের সঙ্গে আমাদের এক্সট্রাডিশন ট্রিটি (প্রত্যর্পণ চুক্তি) রয়েছে, তার মধ্যে ভারত একটি। এই সুযোগ তৎকালীন সরকার ২০১১ সালে তৈরি করে গেছে। আমাদের হাতে অভিযুক্ত আসামি ধরে আনার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরা আদালতের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছি। বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের চারটি প্রকল্পের অনুসন্ধান আমাদের কাছে এসেছে- থার্ড টার্মিনাল, রেডার স্থাপন, কক্সবাজার বিমানবন্দর ও সিলেট বিমানবন্দর। প্রতিবেদনগুলো আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়টি কঠিন জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এটা কঠিন। আগে তাদের শনাক্ত করতে হবে, টাকা কারা পাচার করেছেন। ইতিপূর্বে আমাদের কমিশন থেকে সরকারকে অবহিত করা হয়েছে, যারা বিদেশে অবস্থান করেন কিংবা বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন, তাদের সন্তান-সন্ততি যারা ওখানে থাকছেন, অধিকাংশই বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করে চলে যাচ্ছে। আমরা যদি ৫ অগাস্টকে একটি বেঞ্চমার্ক ধরি, তখন যারা দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন, তাদের যেসব সম্পদ গুলশান-বনানীসহ বিভিন্ন জায়গায় আছে, তারা তাদের প্রপার্টি বিক্রি করছেন কি না? করলে সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে? এই সংবাদ আপনাদেরই দিতে হবে।