পূর্বদেশ ডেস্ক
ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে তিন শর্তে বাংলাদেশকে আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক এক বিলিয়ন ও এডিবি দেবে দেড় বিলিয়ন ডলার। এই ঋণ পেতে বেসরকারি খাতে অ্যাসেস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং নবগঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী বাস্তবায়নের শর্ত পূরণ করতে হবে।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এসব শর্তে সংস্থা দু’টির তরফে ঋণ সহায়তার এই ঘোষণা এসেছে বলে তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা। খবর বিডিনিউজের
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে তিন শর্তে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক, তবে নীতি সহায়তার জন্য প্রথমে দেবে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার।
ডিসেম্বরে এটি পাওয়া যাবে। আর ইনভেস্টমেন্ট লোন ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক। তবে তা পেতে আরও সময় লাগবে’।
এডিবি ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রথমে অর্ধ বিলিয়ন এবং পরে দুই ধাপে আরও অর্ধ বিলিয়ন ডলার করে দেবে, বলেছেন হুসনে আরা শিখা। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও এডিবির বোর্ডে অনুমোদন দেওয়ার পর প্রতিশ্রুত এই ঋণ পাওয়া যাবে। পলিসি বেসড লোনের (বিপিএল) আওয়তায় বাংলাদেশকে এই সহায়তা দেবে তারা’।
ঋণ পেতে বাংলাদেশকে কিছু শর্ত পালন করার বাধ্যবাধকতা থাকবে বলে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, এর মধ্যে বেসরকারি খাতে অ্যাসেস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী তৈরির মতো বিষয় রয়েছে। তবে শর্তগুলোর ৫০ শতাংশই এরই মধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে’।
এদিকে গতকাল রবিবার বিকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনুসর।
বৈঠকে ম্যাক্রো ইকনোমি কীভাবে উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তুলে ধরে হুসনে আরা শিখা বলেন, তাদের আলোচনায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, পাচারের অর্থ ফেরানো ও প্রবৃদ্ধিসহ নানা বিষয় উঠে আসে। আর্থিক খাত সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে বলে গভর্নরকে আশ্বাস দিয়েছেন ব্রেন্ট নেইম্যান।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার এসে ব্যাংকখাত সংস্কারে উদ্যোগ নেয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার এই খাতে যুক্ত হচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা।