আজ শুভ জন্মাষ্টমী

4

সনাতন সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী আজ সোমবার। পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম। পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়েছিল। দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি।
এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা এদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে। আসুন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে তিনি দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীর সকল ধর্মের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজে মানুষের অধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণ সমাজে ভ্রাতৃত্ব ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। সর্বদা মানবতা ও সত্যের পতাকা বহনকারী শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই ন্যায় প্রতিষ্ঠায় স্বমহিমায় আবির্ভূত হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার বন্দনা ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণের দর্শন ও মূল্যবোধ সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সকলকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা সবাই একই পরিবারের মানুষ। ধর্মের কারণে আমরা কেউ কাউকে শত্রু মনে করি না।
তিনি দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মকে ব্যবহার করে কিংবা অপপ্রচার করে সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ববোধকে যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান।
‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, দক্ষ রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ-সংঘাত বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ সমগ্র পৃথিবীতেই অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এবং এ সংকট কাটিয়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, দেশের পরিবর্তিত আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে।