জসিম উদ্দিন মনছুরি
অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ১০ মাসের মাথায় ১০ মে ২০২৫ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগ জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে। আওয়ামী দুঃশাসনে সীমাহীন দুর্নীতি, ঘোষবানিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন ও ধর্ষনে বিগত ১৬ বছর আওয়ামী সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছিলো। শেখ মুজিবের মত একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের জন্য শেখ হাসিনা ভিশন ২০৪১ সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছিলো। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, বিরোধী মতকে কঠোর ভাবে দমন, কালো আইনের মাধ্যমে যাকে ইচ্ছে অহেতুক গ্রেপ্তার ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করেছিলো বিগত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের তাবেদার শেখ হাসিনা ‘র’য়ের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভারতকে খুশি করার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে। ভোট বিহীন নির্বাচনে ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে শেখ হাসিনা প্রায় ১৬ বছর বাংলাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। আওয়ামী দুঃশাসনের ১৬ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। হত্যা করা হয়েছে দেশপ্রেমী শত শত লোককে। ইসলামী শক্তির উত্থান রুদ্ধ করতে দমননীতির আশ্রয় নেয়া হয়। মূলত তার শাসনামলে বিরোধী মতের কেউ তেমন একটা কথা বলতে পারতো না। বিরোধীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট কিংবা কমেন্ট করলেও তাদেরকে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হতে হতো। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা জুলাই আগস্টে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুললে শেখ হাসিনার অস্ত্রধারী পুলিশ বাহিনীর ছাত্রদের দমন করা সম্ভব হয়নি।
ছাত্র জনতা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনাকে ৫ আগস্ট ক্ষমতামচ্যুত করেন। শেখ হাসিনা প্রতিবেশী হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন নজির নাই, দেশের ৩৫০ জন এমপি ও মন্ত্রীর পলায়ন। শেখ হাসিনা ভারতে বসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুমকি-ধমকি এবং রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো। গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের আপামর জনসাধারণের দাবি ছিলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করা। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে তেমন একটা সোচ্চার হয়নি। কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে বারবার সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জোর দাবি জানান। অবশেষে ইসলামী রাজনৈতিক দল ও এনসিপির অবস্থান কর্মসূচিতে বাধ্য হয়ে সরকার আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য আইনের সংশোধনীর প্রতিশ্রুতি দেন। আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি হলে জনমনে স্বস্তি ফিরে। যদিও ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ‘র’য়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়োজিত রাখে। ‘র’ এর প্রধান সহযোগী চিন্ময় দাস হিন্দু সংগঠনের ব্যানারে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহী বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে সরকার তাকে আটক করতে বাধ্য হয়। চিন্ময় দাসের আটককে কেন্দ্র করে তরুণ আইনজীবী আলিফকে ইসকনের সদস্যরা নির্মমভাবে হত্যা করে। বাংলাদেশ যখন অর্থনীতি ও সামরিক শক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ভারত ভালো চোখে দেখেনি। চীনের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি এবং পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নকে কেন্দ্র করে ভারত বাংলাদেশকে বিশৃঙ্খল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করে আসছে। সর্বশেষ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে তার মাধ্যমে বিভিন্ন অডিও ভিডিও কল প্রকাশ করে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টের জন্য প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন কি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যরা তা কঠিন ভাবে প্রতিহত করে। ভারতের সরকার দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যায় বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের রোডম্যাপ।
ভারতের কোন কোন নেতা বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাবার পরিকল্পনাও করছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিয়েছিল সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলা হয় ভারতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। বিভিন্ন সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে সরকার বাধ্য হয়ে ১০ মে ২০২৫ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে বলে জানা যায়। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন টিম তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে অতি দ্রæততর সময়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগে মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিবর্গের বিচার ত্বরান্বিত করা হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধের ইতিহাস সুদীর্ঘ। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগকে কার্যত নিষিদ্ধ করে।শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে তিনি জামায়াত ইসলামী, মুসলিম লীগের তিনটি অংশ, পিডিপিসহ স্বাধীনতা বিরোধী এবং সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেন। শেখ মুজিব ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগসহ সব দল বিলুপ্ত করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর বাকশালের কার্যক্রমসহ সব রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করা হয় সামরিক আইনে। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান ইসলামি রাজনৈতিক দলসহ রাজনৈতিক দলের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে আওয়ামী লীগসহ ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলি রাজনীতি করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে আরো বেশ কিছু সংগঠনকে জঙ্গি তৎপরতার দায়ে নিষিদ্ধ করা হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হিজবুত তাহরির, জেএমবি, সর্বহারাপার্টি উল্লেখযোগ্য। স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে শেখ মুজিব চিহ্নিত ১৫৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে ক্ষমা প্রদর্শন করে দেশ গঠনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানান। ফলে ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ মীমাংসিত একটি বিষয়। যদিও আওয়ামী সরকার বরাবরই জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধের তকমা লাগিয়ে জমায়াত নেতৃবৃন্দ ও বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীদের জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১০ হাজার যুদ্ধাপরাধীর তালিকা করা হয়, তালিকাতে আওয়ামীলীগ দলীয় যুদ্ধাপরাধী ৮০৬০ জন, বিএনপি’র ১০২৪ জন, জামায়াতে ইসলামীর ৩৭ জন রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী আওয়ামী লীগে সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ অপরাধীর বসবাস। জমায়াত নেতৃবৃন্দকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়া হলেও বিচারের মানদন্ড নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন দেখা দেয়। সাক্ষীদের আদালতে উপস্থাপন না করেও তাদের লিখিত সাক্ষ্যকে আদালতে গণ্য করা হয়। স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার যেকোনো জনসভা ও অনুষ্ঠানে রাজাকার বুলি আওড়িয়ে ইসলামপন্থীদের বিষদগার করতেন। অথচ জামাতের সাথে আওয়ামী লীগ জোট গঠন করে ১৯৯৬ সালে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। পরবর্তীতে জামাত ইসলামী ও বিএনপি জোট গঠন করে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করে। বাংলাদেশে বিরোধী মতকে দমনের রাজনীতি শেখ মুজিবের আমল থেকে শুরু হয়, পরিসমাপ্তি হয় সর্বশেষ শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দুঃশাসন আমলে। শেখ হাসিনা সরকার ইসলামী সংগঠন জামায়াত ইসলামীকে হাইকোর্টের মাধ্যমে ২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল করে কার্যত নিষিদ্ধই করে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েকদিন আগে জামাতে ইসলামীকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করেন।যদিও স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি দাবী করা আওয়ামী লীগ বরাবরই জামাতকেই রাজাকার আখ্যা দিয়ে থাকলেও তারা নিজেরাই তালিকা তৈরি করতে গিয়ে মাত্র ৩৭ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। তাদের নিজেদের তালিকা অনুযায়ী তাদের দলেই সবচেয়ে বেশি রাজাকারের অবস্থান ছিল। এদিক দিয়ে বিচার করলে আওয়ামী লীগ রাজাকারদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করে আরাম-আয়েশে জীবন-যাপনে মত্ত ছিলেন। মরহুম শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর দেশের আপামর জনতা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন। শেখ মুজিবের পরিবারের কেউ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শেখ হাসিনারা পাকিস্তান সরকারের আশ্রয় প্রশ্রয়ে ছিলেন। এমনকি তারা পাকিস্তান সরকারের ভাতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদের বিলাসী জীবনযাপন করেন। শেখ মুজিব স্বাধীনতার পর দশ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর স্বাধীনতা যুদ্ধের সব কৃতিত্ব আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবার নিয়ে নেন। এরপর থেকেই তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোক বলে দাবি করে আসছেন। মূলত শেখ মুজিব কখনো চায়নি পাকিস্তান স্বাধীন হোক। তিনি চেয়েছিলেন অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। যার বিদ্রোহী কন্ঠে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সেই জিয়াউর রহমানকেও তারা স্বাধীনতা বিরোধী আখ্যা দিয়ে তাঁর বীর উত্তম খেতাবটি ছিনিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করেছিল। শেখ হাসিনার একগুঁয়েমির কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজ বিলীন হতে চলেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাংলাদেশে প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সীমাহীন দুর্নীতির কারণে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককেও যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পরিষদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের মূলে ছিল শেখ পরিবার। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, দমন নীতি ,হত্যা ও ধর্ষণের কারণে আওয়ামী দুঃশাসনের ইতিহাস জনগণ ইতিহাসের কালো অধ্যায় হিসেবে মনে রাখবে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে তার বিচারের ও আওয়ামী লীগকে দলগতভাবে বিচারের দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়। সেই দাবি কতটুকু পূরণ হয় সেটা দেখার বিষয়। সরকার আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের বিচার করার জন্য সংশোধনী এনছেন এবং বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছেন। এখন জনগণের দাবি হচ্ছে সকল হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন করা এবং দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে সমাপ্ত করা। তাহলেই ভবিষ্যতে কোন সরকার জনগণের উপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে পারবে না। সরকারের কাছে জনগণ জিম্মি হয়ে থাকবে না। জনগণ ভোটাধিকার ফিরে পাবে। নিজেদের পছন্দমত দলকে বা ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে সক্ষম হবে। আওয়ামী লীগের এহেন কার্যক্রম থেকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত বলে বোদ্ধামহলের ধারণা। জনগণ এখন অনেকটা সচেতন এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সংবিধান সংশোধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের চাওয়া সংবিধান হবে জনগণের সংবিধান এবং জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করে এমন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল যাতে ভবিষ্যতে কোন দল সরকারের ছত্রছায়ায় জনগণের উপর নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ চালাতে না পারে। আশা করি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও জনগণের জন্য কাজ করবে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিএনপির ছত্রছায়ায় বেশ কিছু চাঁদাবাজি ও হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তারা কি আবার সেই আওয়ামী দুঃশাসনের দিকে ফিরে যাচ্ছে? এবার দেখার বিষয় আওয়ামী লীগ বিহীন বাংলাদেশের রাজনীতি কোন দিকে যাবে। যে সরকারই আসুক আশা করি জনগণের জন্য কাজ করবে এবং জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবে। যে রাষ্ট্র হবে সুখী সমৃদ্ধশালী এবং বাক স্বাধীনতা ও স্বাধীন মত প্রকাশের দেশ।
লেখক : প্রাবন্ধিক