লালদীঘি এলাকায় পুনরায় চালু হওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশেন আইসোলেশন সেন্টারে ৭২ ঘণ্টায় মাত্র ২ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। আইসোলেশন সেন্টারে রোগী না থাকলেও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এখানে হালকা উপসর্গের রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত সেবার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও আইসিইউ ও হাইফ্লো ন্যাজল ক্যানোলা না থাকায় রোগীরা ভর্তি হতে আগ্রহী হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল করোনা রোগীদের চিকিৎসার দেওয়ার জন্য পুনরায় চালু করা হয় ৫০ শয্যার চসিক আইসোলেশন সেন্টার। এখানে রোগীদের জন্য রয়েছে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা। তবে ৩ দিনে রোগী ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২ জন।
এদিকে নগরীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর বাড়ছে প্রতিনিয়ত। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ২০০ কোভিড বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ১২৮ জন। ১০ আইসিইউ বেডের ৬টিতেই রোগী ভর্তি। বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৩০ বেডের ১৫ বেডেই রোগী ভর্তি আছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ১০ আইসিইউসহ ১৫০ বেডের মধ্যে ৮৫ বেডেই রোগী ভর্তি আছেন। খালি নেই কোনো আইসিইউ বেড। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ১১৮ বেডের মধ্যে ৯৩ বেডেই রোগী ভর্তি আছেন। ১৬ আইসিইউর একটিও খালি নেই। আল মানাহিল নার্চার জেনারেল হাসপাতালের ৪৩ বেডের ৪০টিতেই রোগী ভর্তি আছেন। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের ৩৫ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৩৬ জন। পার্কভিউ হাসপাতালের ৫২ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৭২ জন। যা ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত। ম্যাক্স হাসপাতালের ৫৩ বেডের বিপরীতে ৪৯ বেডে রোগী ভর্তি আছেন। এছাড়াও এই তিন হাসপাতালের ৩০ বেডের সবকটিতেই রোগী ভর্তি আছেন।
পর্যাপ্ত সেবার ব্যবস্থা থাকার পরও রোগী ভর্তি না হওয়ার বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও কোভিড বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ তানজিমুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, সবাই নিশ্চয়তা চায়। হাসপাতালে আইসিইউ ও হাই-ফ্লো ন্যাজল ক্যানোলা আছে যা আইসোলেশন সেন্টারে নেই। ফলে যাদের টাকা আছে তারা বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে এবং আর্থিক সক্ষমতা কম হলে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়া এখনও নগরীর সরকারি হাসপাতালে শয্যা খালি রয়েছে। তাই আইসোলেশন সেন্টারে যেতে আগ্রহী হচ্ছে না। আমি মনে করি নগরীর হাসপাতালগুলোতে সবগুলো শয্যা পূরণ হলে রোগী আইসোলেশন সেন্টারমুখী হবেন।
চসিক আইসোলেশন সেন্টারের পরিচালক ডা. মো. মুজিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ৫০ শয্যার মধ্যে ১৫ শয্যা মহিলা রোগীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ১০ জন চিকিৎসক সবসময় থাকবেন। এ ছাড়া ১২ জন প্যারামেডিকস, ৩ জন ফার্মাসিস্ট, ৮ জন ওয়ার্ডবয়, ২ জন স্টোর কিপার, ৩ জন ওয়ার্ড মাস্টার রোস্টার অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি জানান, পরিস্থিতি বুঝে এ আইসোলেশন সেন্টারে তখন শয্যা ও জনবল বাড়ানো হবে। প্রাথমিকভাবে চসিকের আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা করোনা রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধপত্র-অক্সিজেন সাপোর্ট, খাবারসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। রোগী পরিবহন ও স্থানান্তরের জন্য থাকবে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। আমি আশা করি, শীঘ্রই রোগীর সংখ্যা বাড়বে।











