নিজস্ব প্রতিবেদক
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন বাবলা ধর, সজল শীল ও দুর্লভ দাস।
গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর কোতোয়ালি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে আলিফ হত্যায় ১৬ জনসহ মোট ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
পুলিশ বলছে, সর্বশেষ গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে দুর্লভ দাস আইনজীবী হত্যার ঘটনার সময় ধারালো অস্ত্র হাতে ঘটনাস্থলে ছিলেন। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় ২৫ থেকে ৩০ জন অংশ নেন। কোপানোয় অংশ নেন চারজন। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আইনজীবী হত্যার ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে আসার কথা রয়েছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-পিআর) মো. তারেক আজিজ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন আইনজীবী হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। ঘটনার সময় তার হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। গ্রেপ্তার ৩ জনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে গ্রেপ্তার আসামির সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত ছিলেন ৯ জন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বাধা দেন তার অনুসারীরা। তারা প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় আইনজীবীদের গাড়ি ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের প্রতিবাদে মিছিল বের করেন কিছু আইনজীবী।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মিছিল শেষে ফেরার পথে হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান সাইফুল। তখন তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী আলিফকে চারজন মিলে কোপান। তার নিথর দেহ পড়ে থাকলেও লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন অন্যরা। সেখানে আরও ছিলেন ২৫-৩০ জন। তাদের বেশির ভাগই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। একজন রয়েছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।