মুহাম্মদ আয়াজ, কর্ণফুলী
কর্ণফুলীতে বড় ভাইয়ের অসুস্থতার সুযোগে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে বিরিয়ানি হাউজ গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাই এনাম হোসেন আকাশের বিরুদ্ধে। বড় ভাই মো. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা করেছেন।
জানা গেছে, হেলাল উদ্দিন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জায়গায় ‘মেসার্স হেলাল এন্টারপ্রাইজ’ নামে ইট-বালু ও কংক্রিট সরবরাহের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে তিনি ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় ছোট ভাই আকাশ অফিসটি ভেঙে সেখানে ‘আকাশ ওরশ বিরিয়ানি হাউজ’ স্থাপন করেন।
চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে এসে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সামাজিকভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলায় আকাশসহ আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, শুধু অফিস দখল করেই থেমে থাকেননি আকাশ। সিডিএ আবাসিক এলাকার সড়কের জায়গা দখল করে রমরমা বিরিয়ানি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এছাড়া প্রকাশ্যে গরু-মহিষ জবাই করে মাংস প্রস্তুত করার ফলে পরিবেশ দূষণ এবং দুর্গন্ধে এলাকার মানুষজন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ড্রেনে মাংসের বর্জ্য ফেলে পানি চলাচল ব্যাহত করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বারবার অভিযোগ করা সত্তে¡ও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। মাঝে মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসে সামান্য জরিমানা করে চলে যান। সর্বশেষ ২৮ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় কর্ণফুলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য প্রস্তুত ও পরিবেশনের দায়ে আকাশ ওরশ বিরিয়ানি হাউজকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, শুধু জরিমানা করলেই হবে না, এসব অবৈধ দোকান দ্রæত উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। কারণ সড়ক দখল করে ব্যবসা চালানোর ফলে সড়কে যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে এবং সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ক্রেতাদের ভিড়ে প্রতিদিনই সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
ভুক্তভোগী হেলাল উদ্দিন জানান, ভারতে চিকিৎসা শেষে ফিরে এসে দেখি আমার দোকানের জায়গায় আকাশ বিরিয়ানির দোকান দিয়েছে। আমি প্রতিবাদ করতেই সে কিশোর গ্যাং দিয়ে আমাকে মারধর করে। এরপর কর্ণফুলী থানায় একটি জিডি করি। পরে আদালতে মামলা করি। কিন্তু এরপরও সে আমাকে নিয়মিত হুমকি ও মারধর করে যাচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার চাই।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আকাশ বলেন, ভাইয়ের অভিযোগ সত্য নয়। দোকানটি সিডিএর জায়গায় ঠিক আছে, কিন্তু তিনি অনেকদিন ধরে দোকান বন্ধ রাখার কারণে আমার বাবা আমাকে দোকান করার জন্য দেয়।
এ বিষয়ে সিডিএ আবাসিক প্রকল্প কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ টিপু পূর্বদেশকে জানান, সড়কের দুই পাশেই ৬০ ফিট করে সিডিএর জায়গা রয়েছে। আকাশ ওরশ বিরিয়ানি হাউজটাও সিডিএ’র জায়গার মধ্যেই পড়েছে। খুব শীগ্রই সড়কের দুই পাশেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার কথা রয়েছে।