আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদ সদস্যরা প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন জারির উদ্যোগ ব্যর্থ করে দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এদিকে রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে সিউলের রাস্তায় হাজার হাজার দক্ষিণ কোরিয়ান তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে পার্লামেন্ট অভিমুখে মিছিল করছেন। তারা প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের দাবি আবারও জোরালোভাবে তুলে ধরছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী এক রাজনীতিবিদ বিবিসিকে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইউন পদত্যাগ করুন বা না করুন, আমরা তাকে অভিশংসন করব। রিবিল্ডিং কোরিয়া পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য জুন হিউং কিম বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের নিউজডে অনুষ্ঠানে বলেন, প্রেসিডেন্টই বর্তমানে কোরিয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। তিনি বলেন, তার স্বভাব খুবই বিভেদমূলক, তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার নয়। তিনি বিরোধী দল ও সংসদের সদস্যদের রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করেন। এটা ছিল বিশৃঙ্খলার সময়, কিন্তু আমরা জয়লাভ করেছি। আর এটি কোরিয়ার গণতন্ত্রের শক্তি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক লেফট্যানেন্ট জেনারেল চুন ইন-বাম বলেন, গতকালের ঘটনাগুলো টেলিভিশনে দেখে তিনি অবাক ও হতবাক হয়েছিলেন। তিনি বিবিসির রেডিও ৪-এর টুডে অনুষ্ঠানে বলেন, আমি সাধারণত সহজে বিস্মিত হই না, কিন্তু গতকাল আমার জন্য সত্যিই ভয়ের একটি মুহূর্ত ছিল। তবে তিনি যোগ করেন, সৌভাগ্যবশত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কাজ করেছে। সংবাদসংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, ছয়টি বিরোধী দল প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করার পর, বৃহস্পতিবার এটি সংসদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে পেশ করার পরিকল্পনা করেছে। এরপর প্রস্তাবের উপর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর বা শনিবার, ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে, কারণ প্রস্তাব উত্থাপনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবার হঠাৎই সামরিক আইন জারি করে বসেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার তা প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেন তিনি। দেশটির পার্লামেন্ট সামরিক আইনের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। এতেই প্রেসিডেন্ট তা প্রত্যাহার করে নেন। তার এ ঘোষণার পর সামরিক আইন জারির প্রতিবাদ করতে যারা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তারা উৎসবে মেতে ওঠেন।