আসহাব আরমান
জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল চট্টগ্রামের প্রসূতি নারীদের অনন্য ঠিকানা। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট পরিচালিত হাসপাতালটিতে চট্টগ্রাম নগরীর পাশাপাশি গ্রামেরও অসংখ্য প্রসূতি নারী ও নবজাতক চিকিৎসা সেবা নেন। তবে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কমিটি না থাকায় এক প্রকার অভিভাবকহীনভাবে চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম। ফলে হাসপাতালে সৃষ্ট তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানে ঢাকা অফিসের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৩৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারিসহ সাতটি পদে দুই হাজার ৯৪৬ জন আজীবন সদস্য ও ৪৩৪ জন বার্ষিক সদস্য তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ফখরুল ইসলাম চৌধুরী পরাগ, সেক্রেটারি নির্বাচিত হন মো. আসলাম খান। এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাচিত কমিটি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর থেকে কমিটি ছাড়াই হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে। তবে হাসপাতাল পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য কমিটি দরকার বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ইউনিটের কর্মকর্তা রফিকুল কাদের পূর্বদেশকে বলেন, জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতাল চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু বর্তমানে কমিটি না থাকায় হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও স্বাস্থ্য পরিচালকের মাধ্যমে হাসপাতালটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ফলে হাসপাতালের ‘সাইনিং অথরিটি’ দুই জায়গায় হয়ে গেছে। কমিটি থাকলে জরুরি কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে কমিটির নেতৃবৃন্দ সমাধান করে ফেলতে পারেন। তাই সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটে কমিটি প্রয়োজন। পাশাপাশি কমিটি থাকলে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।
তবে কমিটি থাকা, না থাকা কোনো গুরুত্ব বহন করে না উল্লেখ করে জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও ইনচার্জ আলাউদ্দিন পাটোয়ারী পূর্বদেশকে বলেন, আমি এখানে কাজ করছি ৬ মাস হচ্ছে। সব আমিই দেখছি, কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রেড ক্রিসেন্টের সংবিধানে ইউনিট কমিটির বাধ্যবাধকতা আছে। তবে কমিট থাকলেও খুব একটা লাভ হয় না। কমিটি থাকলে রাজনীতি ঢুকে, রাজনীতির লোক ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে। ভালো লোক কমিটিতে থাকলে হাসপাতালের উন্নতি হবে, ভালো অবস্থানে থাকবে। অন্যথায় হাসপাতালের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।