রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি গতবার যখন পদুয়ায় যাচ্ছিলাম আমার গাড়িবহরের সামনে মামুন ভাই ছিলেন। তখন মাথার মধ্যে ওই চিন্তা আসেনি যে, এই দেখাই শেষ দেখা হচ্ছে। এখন আমি তাদের কিভাবে চেহারা দেখাবো আপনারাই বলেন। তার ছোট ছোট দুটো মেয়ে। তাদের বাবা নেই, আমারও বাবা নেই। তাদের অবস্থা ও আমার অবস্থা একই, বাবা নেই। অপেক্ষায় আছি আমার বাবা হত্যার বিচার হবে, তবে তাদের কাছে ওয়াদা করেছি আমার বাবা হত্যার বিচারের আগে তাদের বাবার হত্যার বিচার হবে।’
গতকাল বুধবার বিকালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নে সম্প্রতি সালিশ বৈঠকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত সৌদি আরব রিয়াদ শাখা বিএনপির সহ-সভাপতি সেকান্দর মামুনের কবর জিয়ারত শেষে তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। হুম্মাম তিনি নিহত মামুনের পরিবারকে সান্তনা দেন এবং তাদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এসময় উৎসুক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বালুর ব্যবসার কারণে প্রতিদিন কোনো না কোনো পরিবারের উপর হামলা হচ্ছে, থানায় কোর্টে শত শত মামলা হচ্ছে, বর্তমান সরকার বার বার বলে এসেছে বালু ব্যবসা অবৈধ, যারা বৈধ ব্যবসা করছে তাদের করতে দেয়া হচ্ছে না। কারণ, সন্ত্রাসী যারা আছে যারা বালু ব্যবসার দখল নিয়ে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী করে কোটি কোটি টাকা কামানোর চেষ্টা করছে এদের কারণে রাঙ্গুনিয়াতে আর বালু ব্যবসা করা সম্ভব না। হয়তো আপনাদের সকলের সাথে যোগাযোগ করে আলাপ আলোচনা করে কিছু শর্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন অনেক গ্রাম আছে অবৈধ বালু ব্যবসার কারণে নদী ভেঙে যাচ্ছে, ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, তবে লোভের কারণে যারা রাজনীতিতে জড়িত তারা এ বালু ব্যবসা বন্ধ করে না, এটার পেছনে কোটি টাকার ব্যবসা আছে। এখন আপনারা সিদ্ধান্ত নিবেন গ্রাম বাঁচানো বেশি জরুরি, নাকি টাকা কামানো বেশি জরুরি। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, আমাকে গ্রাম বাঁচাতে হবে। তাই হয়তো সামনের বছরে বালু ব্যবসা পুরোপুরি অবৈধ হয়ে যেতে পারে।’
এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউসুফ চৌধুরী, পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হেলাল উদ্দিন শাহ, সরফভাটা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, পদুয়া বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম মেম্বার, সরফভাটা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. আবছার মেম্বার, সৈয়দ নুর, উত্তর জেলা ছাক্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ভিপি আনছুর উদ্দিন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক মাকসুদুল হক চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক পারভেজ মোশারফ, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা যুবদল নেতা মো. দিদারুল আলম, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. ফারুকুল ইসলাম, পৌরসভা যুবদলের যুগ্ম আহব্বায়ক ইয়াকুব রানা, সাহেদুল ইসলাম ইফাক, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদস্য সচিব হেলাল আহমেদ, পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহŸায়ক তাহানিয়াজ মোরশেদ তোহা, য্বুদল নেতা মো. লোকমান, মনছুর, ইয়াছিন, ইয়াকুব, আনোয়ার, সাদ্দাম, দেলোয়ার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ নভেম্বর সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে সরফভাটায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এই ঘটনার সমাধান করতে ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সরফভাটা ইউনিয়নের ইত্যাদি চত্বর এলাকায় দুই পক্ষ সালিশ বৈঠকে বসে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মামুন নিহত হন। মামুন মৃত্যুর এক মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে ছুটিতে এসেছেন।