পূর্বদেশ ডেস্ক
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটের ব্যবস্থার প্রশ্নে তিনটি উপায় হাতে থাকার কথা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা ‘অনলাইন ভোটিং’ পদ্ধতিটা পরীক্ষা করে দেখতে চায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সভার পর নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘কমিটি ও উপকমিটি পর্যায়ে আলোচনার পর দেখতে পাচ্ছি, প্রবাসীদের জন্য তিনটি সম্ভাব্য পদ্ধতি আমাদের সামনে আছে। প্রথমটি হলো পোস্টাল ব্যালট; যেটা খুব বেশি কার্যকর নয়। দ্বিতীয়টা ‘প্রক্সি ভোটিং’। আর তৃতীয় উপায় হলো ডিজিটাল বা অনলাইনে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু এই ব্যবস্থাও জটিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রথম দু’টি পদ্ধতি ম্যাচিউর করব। আর তিন নম্বর অপশনটা (অনলাইন ভোটিং) নিয়ে ফিচার ডেভেলপ করব এবং পরীক্ষা করে দেখব সম্ভব কিনা’। খবর বিডিনিউজের
তিনি বলেন, ‘তারপরও সব পক্ষ সম্মত হওয়ার ব্যাপার আছে। কখন চালু করতে পারব জানি না, তবে প্রক্রিয়াটা শুরু করতে চাচ্ছি’।
বেলা সাড়ে ১১ টায় নির্বাচন ভবনে শুরু হয় বর্তমান কমিশনের তৃতীয় সভা। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনও ছিলেন। সভায় সীমানা নির্ধারণ আইনের পাশাপাশি ভোটার তালিকা আইন ও পর্যবেক্ষণ নীতিমালাসহ ১১টি বিষয়ে আলোচনা হয়। ‘কয়েকটি’ কমিটিও গঠন হয় এদিন। প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে সানাউল্লাহ বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও কীভাবে সহজ করা যায়, সে বিষয়ে আজ আমরা আলোচনা করেছি’।
নতুনভাবে পর্যবেক্ষণ নীতিমালা করার পক্ষে
সভায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ও সাংবাদিকদের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন,‘এটা সংশ্লিষ্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে পর্যালোচনার জন্য। পর্যবেক্ষকরা সাধারণত ৫ বছরের জন্য নিবন্ধিত হন। আমাদের পরের নির্বাচন যেহেতু পাঁচ বছর মেয়াদি নয়, তাই এটা একটু রিভিউ করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়ে বিতর্ক আছে। তাই আমরা এটা নতুনভাবে পর্যালোচনা করতে চাচ্ছি। একইভাবে সাংবাদিকদের নীতিমালাও কমিটিতে পাঠানো হয়েছে’।
ডিআরএস স্থাপনে কমিটির সুপারিশ প্রত্যাশা
সানাউল্লাহ বলেন, কমিশনে বর্তমানে যে ডেটা সেন্টার রয়েছে, তাতে ডিজাস্টার রিকভারি সাইট (ডিআরএস) নেই। ডেটা সেন্টারের একটা ব্যাকআপ সার্ভার রয়েছে। তবে ডিজাস্টার রিকভারি সাইট নেই। এটা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা একটা যৌথ কমিটি করে দিয়েছি। তারা দ্রুত এই বিষয়ে সুপারিশ দেবে।
স্মার্টকার্ডের জন্য ‘ব্ল্যাংক কার্ড’ কেনার সিদ্ধান্ত
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এনআইডির ব্ল্যাংক কার্ড সরবরাহ কিছুদিন আটকে ছিল। তিন কোটি কার্ড প্রকিউর করার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি হয়। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সেনাবাহিনী দিতে পারছে না বলে জানানো হয়। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়’।
তিনি বলেন, ‘আগের কমিশনে এটা নিয়ে একটা উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যাই হোক সেনাবাহিনী পরে ১৭২ টাকা করে দিতে রাজি হয়। ৪০৬ কোটি টাকায় যতগুলো কার্ড হয়, সেগুলো তাদের কাছ থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই ব্যাপারে এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কার্ড প্রকিউর করার; এ জন্য যা যা দাপ্তরিক কাজ আছে, এগিয়ে নেওয়া হবে’।
তিনি জানান, জাতীয় নির্বাচনী পদক নীতিমালা নিয়ে পরবর্তী সময়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এনআইডি সংশোধনে সেবা সহজিকরণ
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এনআইডি সংশোধনের নানা জটিলতা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আমাদের কাছে আসছে। যার কিছু মানবিক ও আইনি জায়গা থেকে যৌক্তিক মনে হয়েছে। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি। তারা সংশোধনের সব আবেদন রিভিউ করে দেখবে কীভাবে তা আরও সহজ করা যায়। যেগুলো আইনিভাবে সংশোধন সংশোধনযোগ্য নয়, সেগুলো সহজে নাকচ করার উপায়ও খুঁজবেন কমিটির সদস্যরা’।