অধিক সতর্কতা অবলম্বনের দরকার বলছেন বিশেষজ্ঞরা

15

করোনা মহামারির প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পর সম্ভাব্য তৃতীয় ধাপ আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে ভাইরাসের ধরনে আসতে পারে পরিবর্তন। প্রথম ও দ্বিতয়ি ধাপের ভাইরাসের চেয়ে সম্ভাব্য তৃতীয় ধাপে ভারতীয় বা আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভিন্ন এসব ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় আগের চেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট মানুষের শরীরে দ্রুত ছড়ায়। এছাড়া এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীর দেহে করোনার টিকা খুব একটা কার্যকর না। করোনার এই রূপান্তরিত ভ্যারিয়েন্টটির ক্ষেত্রে কিছু করোনার টিকা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে না। যেমন নোভাভ্যাক্স নামক টিকাটি এমনিতেই ৭০ শতাংশ কার্যকর। কিন্তু আফ্রিকান এই ভ্যারিয়েন্টটি কোন মানুষকে সংক্রমিত করলে সে মানুষের ওই টিকাটির কার্যকারিতা ৫০ শতাংশে নেমে আসে। বাংলাদেশে আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টটি ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ার আগে নমুনা পরীক্ষা করে যেখানে যে মানুষ এটিতে সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের আশপাশে ব্যাপকভাবে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে গেলে, তা বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে জানা গেছে, ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে একজনের দেহে আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ডা. মাহফুজুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। এই ভ্যারিয়েন্টে অল্প সময়ে অধিক মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তাই এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। যাতে এই ভাইরাস অধিক মানুষকে সংক্রমিত করতে না পারে। এছাড়া কেউ আক্রান্ত হওয়া মাত্রই চিকিৎসা নিতে হবে। কোন ধরনের অবহেলা করা যাবে না।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের মৃদু সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় অকার্যকর। অন্য একটি গবেষণা মতে, এক্ষেত্রে নোভাভ্যাক্সের কার্যকারিতা প্রায় ৫০ শতাংশ। তবে, তীব্র সংক্রমণের বিরুদ্ধেও অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা নোভাভ্যাক্স কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে, তা স্পষ্ট নয়। জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাকসিন নিয়ে পরিচালিত একটি বড় পরিসরের গবেষণায় এটি দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের তীব্র সংক্রমণ রোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে পরিচালিত একটি অপেক্ষাকৃত ছোট গবেষণায় এটি এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের মৃদু সংক্রমণ ঠেকাতেও শতভাগ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বদেশকে বলেন, আমরা যদি প্রস্তুত থাকি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রস্তুত রাখি, ইনশাআল্লাহ আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তা মোকাবিলা করতে পারব। অবহেলা করলে সব ভ্যারিয়েন্টেই মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে। এক্ষেত্রে সচেতনতাই হতে পারে একমাত্র ভরসা। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।